আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরতে চান সাকিব, চান শীর্ষ মহলের সদিচ্ছা ও নিরাপত্তা

অনলাইন ডেস্ক:

১৮ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে অনেকবার বাংলাদেশের মুখ উজ্জ্বল করেছেন সাকিব আল হাসান। টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর নেওয়ার পর ওয়ানডেতেও তাকে আর মাঠে দেখা যায়নি। তবে ক্যারিয়ারের ইতি এখানেই টানতে রাজি নন তিনি। বরং, দেশের জার্সি গায়ে আরও এক বা দুই বছর খেলার ইচ্ছা তার প্রবল। এজন্য সরকারের উচ্চপর্যায়ের সদিচ্ছা ও নিরাপত্তার নিশ্চয়তা প্রত্যাশা করছেন এই অলরাউন্ডার।

এক সাম্প্রতিক সাক্ষাৎকারে সাকিব বলেন, “আমি এখনও বাংলাদেশের হয়ে খেলতে চাই। এই আকাঙ্ক্ষা সবসময় ছিল এবং আছে। এজন্য বিসিবি সভাপতি থেকে শুরু করে সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। আমি চাই দেশের হয়ে ক্যারিয়ারের ইতি টানতে।”

বিশ্বকাপের পরপরই ক্রিকেট থেকে দূরে সরে গেলেও খেলার প্রতি মনোযোগ হারাননি বলেও জানান সাকিব। “আমি তখন অনেক দিন ধরেই দেশের বাইরে ছিলাম। প্রথমে যুক্তরাষ্ট্রে এমএলসি খেললাম, এরপর কানাডায়। ছবিটা কানাডায় তোলা। আমি পোস্ট করিনি, যদিও দায় নিচ্ছি। এটা ছিল পূর্বপরিকল্পিত পারিবারিক সফর। একজন পাবলিক ফিগার হিসেবে আমার আরও সচেতন থাকা উচিত ছিল—আমি সেটা মানছি। তবে মনোযোগ সবসময় ক্রিকেটেই ছিল, রাজনীতিতে নয়।”

রাজনীতিতে সম্পৃক্ততা থাকলেও দলের কোনো গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন না বলেও জানান তিনি। “হ্যাঁ, আমি এমপি ছিলাম, এখন নেই। তবে আমি কোনো রাজনৈতিক পদের অধিকারী নই। আমাকে কখনও রাজনীতিতে মনোযোগ দিতে বলা হয়নি—সবসময় বলা হয়েছে, ‘ক্রিকেট খেলো’। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, ১৮-২০ বছর দেশের হয়ে খেলার পর এটা বন্ধ হয়ে যাওয়া কি অসম্মানজনক নয়?”

সাকিবের মতে, মানসিক চাপ ও নানা সীমাবদ্ধতার কারণে তিনি নিজে থেকেই কিছুটা সরে গিয়েছিলেন। “বুঝতে পারলাম শেষ—যখন দেখলাম এত চাপ নিয়ে আর খেলা সম্ভব নয়। তবে দেশের হয়ে খেলতে না চাওয়ার কোনো প্রশ্নই আসে না। আমি সবসময় খেলতে চেয়েছি।”

তিনি আরও বলেন, “আমার মনে হয় বাংলাদেশের হয়ে খেলার অধিকার আমি রাখি। বেশিরভাগ মানুষই চায় আমি আরও কিছুদিন খেলি এবং দেশের জার্সিতে অবসর নিই। আমি বিশ্বাস করি, সদিচ্ছা থাকলে বিষয়টির সমাধান সম্ভব এবং এটা শীর্ষ পর্যায় থেকেই আসতে হবে।”

নিরাপত্তার বিষয়টিও তুলে ধরেন সাকিব। “আমার নিরাপত্তা নিশ্চিত হলে আমি অবশ্যই খেলব। আমার নামে যে মামলা হয়েছে, বাদী নিজেই জানে না সেখানে আমার নাম কীভাবে এসেছে। এটা অবশ্যই বিবেচনার বিষয়।”

শেষ পর্যন্ত দেশের হয়ে বিদায়ী টেস্ট কিংবা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলা না হওয়ায় তার মনে কোনো অভিযোগ নেই বলে জানালেন তিনি। “আমার কারও প্রতি কোনো অভিযোগ নেই, কোনো ক্ষোভও নেই। সবারই সীমাবদ্ধতা থাকে। আপনি যদি আমাকে ১৮ বছর দিয়ে বিচার করেন, না হয় গত ৬ মাস দিয়ে—তা আপনার বিষয়।”