অনলাইন ডেস্ক:
ইন্দোনেশিয়ার সিদোয়ারজো শহরে একটি ইসলামি বোর্ডিং স্কুল ধসে পড়ার ঘটনায় এখনো নিখোঁজ ৫৯ জন। তবে জীবনের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি বলে গতকাল বৃহস্পতিবার উদ্ধারকর্মীরা জানিয়েছে। গত সোমবার এই দুর্ঘটনা ঘটে। ভবনটি ধসে পড়ার সময় শত শত শিক্ষার্থী ভেতরে অবস্থান করছিল। যাদের বেশিরভাগই কিশোর ছেলে। এ ঘটনায় অন্তত ৫ জন শিক্ষার্থী নিহত এবং প্রায় ১০০ জন আহত হয়েছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। উদ্ধারকাজ শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত ধ্বংসস্তূপ থেকে ১৩ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে, যদিও তাদের মধ্যে দুজন পরে হাসপাতালে মারা যান। ভবনের অস্থিতিশীল কাঠামোর কারণে উদ্ধার অভিযান চালানো কঠিন হয়ে উঠেছিল। গতকাল বৃহস্পতিবার দুর্যোগ মোকাবিলা সংস্থা জানিয়েছে, থার্মাল ড্রোন ব্যবহার করেও ধ্বংসস্তূপের ভেতর কোনো জীবনের চিহ্ন ধরা পড়েনি। দেশটির দুর্যোগ মোকাবিলা সংস্থা প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল সুহারিয়ান্তো সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘গত রাতে আমরা পুরো এলাকা নীরব রেখেছিলাম, আশায় ছিলাম আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে হয়তো কোনো জীবনের সঙ্কেত পাওয়া যাবে। কিন্তু বৈজ্ঞানিকভাবে কোনো চিহ্ন মেলেনি।’
তিনি জানান, উদ্ধারকাজ এখন নতুন ধাপে প্রবেশ করছে। ভারী যন্ত্রপাতি দিয়ে কংক্রিটের স্ল্যাব সরানো হবে। এগুলো হয় ক্রেন দিয়ে তোলা হবে অথবা ছোট ছোট টুকরো করে কাটা হবে। তবে এর আগে এই কাজ শুরু করা হয়নি। কারণ এতে ভবনের আরো ধস নামতে পারত এবং জীবিত কেউ থাকলে তাদের ঝুঁকি বাড়ত। এর আগের দিন, গত বুধবার, ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে এখনো কান্না ও চিৎকার শোনা যাচ্ছিল বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল। নিখোঁজদের পরিবারের সদস্যরা স্কুলের সামনে উদ্বেগ নিয়ে অপেক্ষা করছেন। অনেকে অশ্রুসিক্ত চোখে প্রিয়জনের জীবিত ফেরার আশা ধরে রেখেছেন। মাউলানা বায়ু রিজকি প্রতামা বলেন, ‘আমি আশা করছি আমার ভাই বেঁচে থাকবে। চার দিন ধরে তাকে নিচে কষ্টে থাকতে হচ্ছে ভেবে আমি খুবই দুঃখিত।’ ৫২ বছর বয়সী আহমাদ ইখসান রয়টার্সকে বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি আমার ছেলে এখনো বেঁচে আছে।’ নিখোঁজের সংখ্যা ওঠানামা করছে। প্রথমে ৩৮ এরপর ৯১ এবং সর্বশেষ বুধবার পর্যন্ত ৫৯ জন নিখোঁজ বলে ধারণা করা হচ্ছে। ভবনটি তখনো নির্মাণাধীন ছিল এবং এর ওপর অতিরিক্ত দুটি তলা যোগ করা হচ্ছিল। জানা গেছে, ভবনের ভিত্তি দুর্বল হওয়ায় এই অতিরিক্ত ওজন বহন করতে পারেনি। সিদোয়ারজোর স্থানীয় প্রশাসক জানিয়েছেন, স্কুল কর্তৃপক্ষ ভবনে নতুন তলা যোগ করার জন্য কোনো অনুমতিও নেয়নি। সূত্র : বিবিসি











