অনলাইন ডেস্ক:
একুশে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে বাংলা একাডেমিতে আয়োজিত বইমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, “একুশ আমাদের মূল সত্তার পরিচয়, একুশ আমাদের ঐক্যের দৃঢ় বন্ধন।”
প্রধান উপদেষ্টা আরো বলেন, “বরকত, সালাম, রফিক, জাব্বারের রক্তে যে অঙ্গীকার ছিল, তা দেশের নতুন বাংলাদেশ গড়ার মহাবিস্ফোরণের শক্তি হিসেবে কাজ করেছে। একুশের ঐক্য দেশের ১৭ কোটি মানুষের সত্ত্বায় নতুন প্রত্যয় নিয়ে এসেছে, যা গণঅভ্যুত্থান ঘটিয়ে দেশকে পাল্টে দিয়েছে।”
অধ্যাপক ইউনূস একুশকে প্রজন্মের ঊর্ধ্বে উল্লেখ করে বলেন, “একুশের তাৎপর্য শুধু ভাষা আন্দোলনেই সীমাবদ্ধ নয়, এটি আমাদের ঐক্যের প্রতীক, যা দেশের বৃহত্তর স্বাধিকার আন্দোলন এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতীক হিসেবে কাজ করছে। একুশ আমাদের সাহসী করে তুলেছে, এবং ছাত্র-জনতার সংগ্রাম সেই সাহসেরই প্রমাণ।”
তিনি বলেন, “একুশের প্রদর্শিত ঐক্য আমাদের নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়কে শক্তিশালী করেছে। গত ৬ মাসে জুলাই মাসের অভ্যুত্থান জাতিকে ঐতিহাসিক গভীরতায় ঐক্যবদ্ধ করেছে, যার কারণে দেশ দ্রুত উন্নতির দিকে এগিয়ে যেতে প্রস্তুত।”
বাংলা একাডেমির বইমেলার জন্য তিনি তাঁর প্রশংসা জানিয়ে বলেন, “এই মেলা ক্রমেই আমাদের জাতীয় জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠছে এবং এর গুণগত মান প্রতিনিয়ত বাড়ছে। প্রতিবছর সেরা লেখক এবং সেরা প্রকাশক নির্বাচন করে গুণগত প্রতিযোগিতা সৃষ্টি করা যেতে পারে, যা লেখক ও প্রকাশকদের উৎসাহিত করবে।”
অধ্যাপক ইউনূস আরও বলেন, “একুশের চেতনা আমরা যদি শুধুমাত্র ভাষা আন্দোলন হিসেবেই না, বরং স্বাধিকার আন্দোলন হিসেবেও দেখি, তাহলে এটি আরও বৃহত্তর হয়ে উঠবে। দেশের তরুণ-তরুণী, কিশোর-কিশোরী এবং নতুন উদ্যোক্তাদের স্বীকৃতি দেওয়া প্রয়োজন। প্রবাসী বাংলাদেশীদের অবদানও স্বীকৃতি পাওয়া উচিত, যাঁরা বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে বাংলাদেশের সম্মান বৃদ্ধি করছেন।”
তিনি বলেন, “একুশের দিন, প্রবাসীরা সবসময় তাদের দেশকে স্মরণ করেন, এবং তাদের সন্তানদের কাছে বাংলাদেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্য তুলে ধরেন।”