কাশ্মীর ইস্যুতে ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা চরমে, পিটিআই’র জাতীয় ঐক্যের আহ্বান ও ইমরান খানের মুক্তির দাবি

অনলাইন ডেস্ক:

কাশ্মীরের পেহেলগামে সাম্প্রতিক ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার জেরে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ফের চরম উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। এই হামলায় ২৬ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়, যা ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার পর কাশ্মীরে সবচেয়ে ভয়াবহ হামলা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। হামলার পর দুই দেশের মধ্যে সামরিক, কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক সম্পর্ক ভয়াবহভাবে অবনতি হয়েছে।

হামলার জন্য ভারত সরাসরি পাকিস্তানকে দায়ী করে ১৯৬০ সালের ঐতিহাসিক সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত ঘোষণা করে। জবাবে পাকিস্তান সিমলা চুক্তি স্থগিত করে এবং ভারতের আকাশসীমা ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। পাশাপাশি দুই দেশের মধ্যকার সব ধরনের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যও বন্ধ করে দেওয়া হয়। সীমান্তে একাধিকবার গোলাগুলির ঘটনা ঘটে এবং উভয় পক্ষই সামরিক প্রস্তুতি জোরদার করেছে।

পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ ও রেলমন্ত্রী হানিফ আব্বাসি স্পষ্ট জানিয়েছেন, জাতীয় নিরাপত্তার প্রশ্নে পাকিস্তান প্রয়োজনে পারমাণবিক হামলার পথেও যেতে প্রস্তুত। অন্যদিকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কাশ্মীরি হামলার জন্য দোষীদের ‘চূড়ান্ত শাস্তি’ দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

এমন উত্তপ্ত প্রেক্ষাপটে পাকিস্তানে জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়েছে প্রধান বিরোধী দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)। দলটির পক্ষ থেকে সিনেটে সর্বদলীয় বৈঠকের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের মুক্তির জোরালো দাবি জানানো হয়েছে। দলটির সিনেটর ও পার্লামেন্টারি নেতা আলী জাফর বলেন, “রাজনৈতিক মতপার্থক্য এখন বড় বিষয় নয়, আমাদের দরকার জাতীয় ঐক্য। একটি সর্বদলীয় বৈঠকে ইমরান খানের অংশগ্রহণ বিশ্বকে বার্তা দেবে যে পাকিস্তান ঐক্যবদ্ধ, দৃঢ় এবং প্রস্তুত।”

পিটিআই নেতা শিবলি ফারাজ আরও বলেন, ইমরান খানকে জনগণের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ দিতে হবে। তিনি দাবি করেন, ইমরান খান মিনার-ই-পাকিস্তানে এক কোটির বেশি মানুষ নিয়ে সমাবেশ করতে পারেন এবং ওয়াগা সীমান্তমুখী পদযাত্রার ডাক দিতে পারেন। তিনি ইমরান খানের বিরুদ্ধে দায়ের করা ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ মামলা প্রত্যাহার এবং সব রাজনৈতিক বন্দির মুক্তি দাবি করেন।

অন্যদিকে, ক্ষমতাসীন পিএমএল-এন দলের সিনেটর ইরফানুল হক সিদ্দিকী পেহেলগাম হামলাকে “ফলস ফ্ল্যাগ অপারেশন” আখ্যা দিয়ে বলেন, “যেখানে প্রতি সাতজন কাশ্মিরির বিপরীতে একজন ভারতীয় সেনা মোতায়েন, সেখানে এত কড়া নিরাপত্তা থাকার পরও কীভাবে এমন হামলা সম্ভব?” তার মতে, এই হামলার লক্ষ্য হলো পাকিস্তানকে আন্তর্জাতিকভাবে হেয় করা।