নিজস্ব প্রতিবেদক:
কেরাণীগঞ্জে তিন বছর আগে মারিয়া নামে এক কিশোরীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল। আজ (মঙ্গলবার) সকালে বিচারক মুন্সী মো. মশিয়ার রহমান এ রায় দেন।
দণ্ডিতরা হলেন— কেরাণীগঞ্জ মডেল থানার খোলামোড়া গ্রামের মো. সজিব, ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার খাঁকান্দা গ্রামের মো. রাকিব, এবং শরীয়তপুরের পালং মডেল থানার মুসলিম মাতবরের ওরফে ভ্যালকা শাওন। এছাড়া, লাশ গুমের ঘটনায় তাদের প্রত্যেককে সাত বছর করে কারাদণ্ড, ১০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড এবং অনাদায়ে এক বছর বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
রাষ্ট্রপক্ষের প্রসিকিউটর এরশাদ আলম জানান, “ট্রাইব্যুনাল নির্দেশ দিয়েছেন যে, আসামিদের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি বিক্রির মাধ্যমে অর্থদণ্ডের টাকা আদায় করে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দিতে হবে।”
এদিকে, আলী আকবর (২২) এবং মো. রিয়াজ (২২) নামে দুজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তারা খালাস পেয়েছেন।
রায় ঘোষণার আগে কারাগারে থাকা রাকিব, রিয়াজ এবং শাওনকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। রায় শেষে দণ্ডিত রাকিব ও শাওনকে সাজা পরোয়ানা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তবে, সজিব পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালের ১১ জুন কেরাণীগঞ্জ মডেল থানার আঁটিবাজার এলাকায় পুলিশ টহল দিচ্ছিল। সকাল পৌনে ৮টার দিকে জরুরি সেবা ৯৯৯ এর মাধ্যমে খবর পায় যে, পশ্চিম বামনসুর জামে মসজিদের সামনে একটি পুকুরে এক নারী লাশ ভাসছে। পুলিশ সেখানে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে এবং পরে কেরাণীগঞ্জ মডেল থানায় মামলা দায়ের করা হয়।
পুলিশের তদন্তে ভুক্তভোগীর বান্ধবী বৃষ্টি আক্তার আদালতে সাক্ষ্য দেন, তিনি শনাক্ত করেন যে, লাশটি তার বান্ধবী মারিয়ার। এরপর শাওন গ্রেপ্তার হন এবং দোষ স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেন। শাওন জানান, তার সহচর রাকিব, সজিব, ও আলী আকবর মিলে মারিয়াকে ধর্ষণ করে এবং শ্বাসরোধে হত্যা করে পুকুরে ফেলে দেয়। পরবর্তীতে রাকিব এবং সজিবও গ্রেপ্তার হয়ে একই কথা বলেন।
কেরাণীগঞ্জ মডেল থানার উপপরিদর্শক অলক কুমার দে ২০২৩ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পাঁচজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন। মামলার বিচার চলাকালে ট্রাইব্যুনাল ১৯ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন।