চলমান অস্থিরতা ও আন্দোলনের কারণে শিক্ষাক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত

ফাইল ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক:

দেশের শিক্ষাখাতে চলমান অস্থিরতা ও আন্দোলনের কারণে শিক্ষাক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে এবং এতে শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি বাড়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে। চলতি শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থীরা নানা কারণে পিছিয়ে পড়ছে, যেমন বই না পাওয়া, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অস্থিরতা, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ইত্যাদি। এসব কারণে পড়াশোনার গতি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

গত বছর থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অস্থিরতা দেখা দেয়, যখন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তারা পেনশন স্কিম বাতিলের দাবিতে কর্মবিরতি শুরু করেন। পাশাপাশি কোটা আন্দোলনও চলে, যা শুধুমাত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে দেশজুড়ে স্কুল ও কলেজগুলোতেও ছড়িয়ে পড়ে। এর ফলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে একটি অস্থির পরিবেশ সৃষ্টি হয়, যার পরিণতিতে পরীক্ষা ও ক্লাস বাতিল হয়ে যায়। এসব আন্দোলন ও সংকটের কারণে শিক্ষার্থীরা তাদের পড়াশোনায় মনোযোগ দিতে পারছে না এবং অনেকেই শিখন ঘাটতির শিকার হচ্ছেন।

এছাড়া, শিক্ষক সংকটও অত্যন্ত প্রকট। বেসরকারি স্কুল-কলেজগুলোতে শিক্ষক সংকটের কারণে শ্রেণি কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটছে। সরকারি স্কুল-কলেজে শিক্ষকরা বেতন-ভাতা ও বিভিন্ন দাবি নিয়ে আন্দোলন করছেন। এতে তারা শ্রেণি কার্যক্রমে বেশি সময় দিচ্ছেন না, ফলে শিক্ষার মানে প্রভাব পড়ছে। শিক্ষকরা আন্দোলনরত থাকলে, শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখা সম্ভব হয় না। এই সংকট শুধু শিক্ষকদের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে শিক্ষার্থীদের জন্যও এক গুরুতর সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এর মধ্যে সরকারের উদ্যোগের অভাবও তীব্র হয়েছে। ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. মনজুর আহমদ বলেন, “শিক্ষায় সমস্যা দীর্ঘদিন ধরেই ছিল, তবে বর্তমান সরকার এই বিষয়ে কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পড়ালেখার পরিবেশ ফিরিয়ে আনা জরুরি।”

সংক্ষেপে, দেশের শিক্ষা খাতের বর্তমান পরিস্থিতি উদ্বেগজনক এবং এটি দীর্ঘমেয়াদী নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। সরকারের পক্ষ থেকে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি যাতে শিক্ষার মান পুনরুদ্ধার ও শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয়।