জেলা প্রতিনিধি :
কুমিল্লার চান্দিনায় আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর আওতায় নির্মিত ঘরগুলোর বরাদ্দ নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। অনেক সুবিধাভোগী পরিবার বরাদ্দ নেওয়ার পর সেখানে বসবাস করছেন না। ফলে প্রকল্পের বেশ কিছু ঘর পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। স্থানীয়রা দাবি তুলেছেন, এসব ঘরের বরাদ্দ বাতিল করে প্রকৃত গৃহহীনদের নামে নতুনভাবে বরাদ্দ দেওয়া হোক।
সরেজমিনে মাইজখার ইউনিয়নের ভোমরকান্দি গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, ৪০টি ঘরের মধ্যে ১০টি ফাঁকা। কোনো ঘরের দরজায় তালা ঝুলছে, আবার কোনো ঘরের দরজা খোলা রেখেই চলে গেছেন সুবিধাভোগীরা। ফাঁকা ঘরগুলোর সামনে লাকড়ি, খড়কুটোর স্তুপ দেখা গেছে, আবার কিছু ঘরে হাঁস-মুরগি পালন করা হচ্ছে।
কেরণখাল ইউনিয়নের ছয়ঘড়িয়া গ্রামেও একই চিত্র দেখা গেছে। সেখানে ৩০টি ঘরের মধ্যে ১০টি পরিবার বরাদ্দ নেওয়ার পরও বসবাস করছেন না। ৪টি ঘরে প্রকৃত সুবিধাভোগীরা না থাকলেও অন্যরা বসবাস করছেন। শুহিলপুর ও অম্বরপুর গ্রামেও বেশ কিছু ঘর পরিত্যক্ত রয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রকৃত ভূমিহীনদের বাদ দিয়ে রাজনৈতিক তদবির ও প্রশাসনিক সুপারিশের মাধ্যমে অনেকের হাতে ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, যারা আসলে গৃহহীন নন। কেউ কেউ ঘর বরাদ্দ নেওয়ার পর শহরে চলে গেছেন, আবার কেউ টাকার বিনিময়ে ঘর পেয়েছেন। অনেক সুবিধাভোগী ঘরের বৈদ্যুতিক সংযোগ ও মূল্যবান সামগ্রী খুলে নিয়ে গেছেন।
ভোমরকান্দি আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা ওসমান গণি জানান, বরাদ্দ দেওয়ার সময় এলোমেলোভাবে বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষকে এনে এখানে ঘর দেওয়া হয়েছে। ফলে তারা এখানে কাজের সুযোগ না পেয়ে অন্যত্র চলে গেছেন। একই অভিযোগ করেছেন অন্যান্য আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দারাও। তারা জানান, রাজনৈতিক নেতা, জনপ্রতিনিধি এবং প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সুপারিশে প্রকৃত ভূমিহীনদের বাদ দিয়ে অনেকের হাতে ঘর তুলে দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে চান্দিনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাজিয়া হোসেন জানান, প্রশাসন বিষয়টি তদন্ত করছে। যারা প্রকৃতপক্ষে ঘরে বসবাস করছেন না, তাদের বরাদ্দ বাতিল করে নতুন তালিকা করা হবে। অসাধু উপায়ে কেউ যদি ঘর বরাদ্দ নিয়ে থাকেন, তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি আশ্বাস দিয়েছেন।