জবি শিক্ষার্থী জুবায়েদ খুন: প্রেমঘটিত দ্বন্দ্বে পরিকল্পিত হত্যার অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক:

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য জুবায়েদ হোসাইন খুনের ঘটনায় প্রেমঘটিত দ্বন্দ্বের চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে।

বংশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম জানান, আটক ছাত্রী বার্জিস শাবনাম বর্ষা জানিয়েছেন— তার সাবেক প্রেমিক মাহির রহমানের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন হওয়ার পর তিনি টিউটর জুবায়েদকে পছন্দ করেন বলে জানান। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মাহির তার বন্ধু নাফিসকে সঙ্গে নিয়ে জুবায়েদকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। যদিও বর্ষা দাবি করেছেন, হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে তিনি কিছুই জানতেন না।

ওসি জানান, বর্ষা ও মাহিরের দীর্ঘদিনের সম্পর্ক থাকলেও সম্প্রতি তা ভেঙে যায়। এরপর জুবায়েদ, যিনি গত এক বছর ধরে বর্ষাকে টিউশনি করাতেন, তার প্রতি বর্ষার আগ্রহের কথা মাহির জানতে পারলে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়।

রোববার (১৯ অক্টোবর) বিকেল পৌনে ৫টার দিকে পুরান ঢাকার আরমানিটোলার ১৫, নূরবক্স লেনের ‘রৌশান ভিলা’র তৃতীয় তলায় ছুরিকাঘাতে খুন হন জুবায়েদ। সিঁড়ি থেকে তিনতলা পর্যন্ত রক্ত ছড়িয়ে ছিল, এবং তিনতলায় উপুড় হয়ে ছিল তার নিথর দেহ।

ঘটনার পর বর্ষা ও তার পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। রাত ১১টার দিকে তাকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়। ওসি জানান, জিজ্ঞাসাবাদের সময় বর্ষার মধ্যে আতঙ্ক বা অনুশোচনার লক্ষণ দেখা যায়নি।

নিহত জুবায়েদ কুমিল্লার বাসিন্দা ও কুমিল্লা জেলা ছাত্র কল্যাণ পরিষদের সভাপতি ছিলেন। তার সহপাঠীরা হত্যার বিচার দাবিতে তাঁতীবাজার মোড় অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। তারা স্লোগান দেন— “আমার ভাই মর্গে, খুনি কেন বাইরে”, “বিচার চাই”।

অভিযোগ উঠেছে, খুনের ১৮ ঘণ্টা পরও বংশাল থানায় মামলা গ্রহণ করা হয়নি। নিহতের বড় ভাই এনায়েত হোসেন সৈকত জানান, তারা বর্ষা, তার বাবা-মা, মাহির ও নাফিসের নামে মামলা দিতে গেলে ওসি পরামর্শ দেন মামলা দুর্বল না করতে।

ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, “তদন্তে যারা সরাসরি জড়িত, তা নিশ্চিত হওয়ার পর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মামলার প্রস্তুতি চলছে।”

নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মিটফোর্ড হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। সোমবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।