অনলাইন ডেস্ক:
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস ক্রমবর্ধমান ইসলামবিদ্বেষ নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং বিভিন্ন দেশের সরকারকে ধর্মীয় স্বাধীনতা রক্ষার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলোকে ঘৃণাত্মক বক্তব্য প্রতিহত করতে কার্যকর ভূমিকা রাখার অনুরোধ করেন।
গতকাল শনিবার আন্তর্জাতিক ইসলামবিদ্বেষ প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে দেওয়া এক বক্তব্যে গুতেরেস বলেন, “বিশ্বব্যাপী ইসলামবিদ্বেষ, আরববিরোধী মনোভাব এবং ইহুদিবিদ্বেষ বৃদ্ধি পাচ্ছে, বিশেষ করে গাজার ওপর ইসরায়েলের ১৭ মাসব্যাপী যুদ্ধের পর থেকে।” তিনি বলেন, ‘ক্রমবর্ধমান ইসলামবিদ্বেষ, জাতিগত বিদ্বেষ এবং বৈষম্যমূলক নীতি মানবাধিকার ও মর্যাদাকে লঙ্ঘন করছে, যা ব্যক্তিগত সহিংসতা এবং উপাসনালয়ের ওপর হামলার রূপ নিচ্ছে। এটি সামগ্রিকভাবে ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা, চরমপন্থী মতাদর্শ এবং দুর্বল জনগোষ্ঠীর ওপর আক্রমণের একটি অংশ।’
গুতেরেস বিশ্বজুড়ে সরকারের প্রতি ‘সামাজিক সম্প্রীতি বাড়ানো এবং ধর্মীয় স্বাধীনতা রক্ষা করার’ আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলোকে ঘৃণাত্মক বক্তব্য ও হয়রানি প্রতিরোধে ব্যবস্থা নিতে হবে। আমাদের সবাইকে ধর্মীয় বিদ্বেষ, বর্ণবাদ ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে।”
এছাড়া, সম্প্রতি বেশ কয়েকটি মানবাধিকার সংগঠন যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, ভারতসহ বিভিন্ন দেশে ইসলামবিদ্বেষী হামলা ও বিদ্বেষমূলক বক্তব্যের ঘটনা রেকর্ড মাত্রায় পৌঁছেছে বলে জানায়। কাউন্সিল অন আমেরিকান-ইসলামিক রিলেশন্স (সিএআইআর) মঙ্গলবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানায়, ২০২৩ সালে ইসলামবিদ্বেষ এবং আরব-বিরোধী ঘটনার অভিযোগের সংখ্যা ৮,৬৫৮-এ পৌঁছেছে, যা আগের বছরের তুলনায় ৭.৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। সংস্থাটির দাবি, ১৯৯৬ সালে তথ্য সংরক্ষণ শুরুর পর থেকে এটি সর্বোচ্চ সংখ্যা।
জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল মিগুয়েল অ্যাঞ্জেল মোরাতিনোস মুসলমানদের ‘প্রাতিষ্ঠানিক বৈষম্য এবং সামাজিক-অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধতার’ মুখোমুখি হওয়ার বিষয়টি তুলে ধরেন। তিনি জানান, ‘মুসলিমদের প্রতি অযৌক্তিকভাবে জাতিগত সন্দেহ, পক্ষপাতদুষ্ট সংবাদমাধ্যম প্রতিবেদন এবং কিছু রাজনৈতিক নেতার ইসলামবিরোধী বক্তব্যের মাধ্যমে আরও ইসলামবিদ্বেষ বাড়ানো হচ্ছে।’
বছরের পর বছর ধরে মানবাধিকার কর্মীরা ইসলাম এবং আরব সম্প্রদায়ের প্রতি নেতিবাচক ধারণা তৈরি করার বিষয়ে সতর্ক করে আসছেন। বিশেষত, কিছু ব্যক্তি মুসলিম ও আরব সম্প্রদায়ের সঙ্গে সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর সম্পর্ক তৈরি করে ভুল বার্তা ছড়াচ্ছে।
সূত্র: আল জাজিরা