অনলাইন ডেস্ক:
জাতিসংঘ গতকাল এক সতর্কবার্তায় জানিয়েছে, বিশ্বব্যাপী সহায়তা হ্রাসের কারণে মাতৃমৃত্যু কমানোর প্রচেষ্টা বিপদে পড়েছে। ২০১৬ সাল থেকে মাতৃমৃত্যুর হার হ্রাসের অগ্রগতি স্থবির হয়ে পড়েছে, যার ফলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শতাব্দীর শুরু থেকে বিশ্বব্যাপী মাতৃমৃত্যু ৪০ শতাংশ কমেছে, তবে গত প্রায় এক দশক ধরে অগ্রগতি ধীর হয়ে গেছে। ২০২৩ সালে আনুমানিক ২ লাখ ৬০ হাজার মাতৃমৃত্যু ঘটেছে, যা প্রতি দুই মিনিটে এক মৃত্যুর সমান।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার যৌন প্রজনন স্বাস্থ্য ও গবেষণা বিভাগের প্রধান প্যাসকেল অ্যালোটি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যেই কিছু অঞ্চলে পিছনের দিকে সরে যাচ্ছি।’ তিনি আরো বলেন, ‘বেশিরভাগ মাতৃমৃত্যু প্রতিরোধযোগ্য, কিন্তু সহায়তা হ্রাসের কারণে পরিস্থিতি মারাত্মক হতে পারে।’
ডব্লিউএইচও-র প্রধান টেড্রোস আধানম ঘেব্রেয়েসুস বলেছেন, ‘এটি আশার আলো হলেও, গর্ভাবস্থায় নারী ও মেয়েরা এখনো বিশ্বের অনেক অঞ্চলে বিপদের মধ্যে রয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘মানসম্মত মাতৃত্বকালীন সেবা নিশ্চিত করা এবং নারীদের স্বাস্থ্য ও প্রজনন অধিকার শক্তিশালী করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
জাতিসংঘের কর্মকর্তারা আরও বলেছেন, বিশ্বব্যাপী সহায়তার অভাব এবং মার্কিন প্রশাসনের সহায়তা হ্রাসের ফলে মানবিক সংস্থাগুলোর কার্যক্রম বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে ২০১৭ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর, বেশিরভাগ মার্কিন বৈদেশিক সাহায্য তহবিল বন্ধ হয়ে যায়, যা পরিস্থিতি আরও জটিল করে তোলে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সহকারী মহাপরিচালক ব্রুস অ্যালওয়াড সতর্ক করেছেন, ‘মাতৃমৃত্যুর বিরুদ্ধে লড়াই আরও কঠিন হয়ে পড়বে, এবং দেশগুলোর কাছে তহবিল কম থাকার কারণে প্রয়োজনীয় সেবা চালু রাখা সম্ভব হবে না।’
এই পরিস্থিতিতে, আন্তর্জাতিক সহযোগিতা এবং যথাযথ সহায়তার মাধ্যমে মাতৃমৃত্যু কমানোর প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা একান্ত জরুরি।