নিজস্ব প্রতিবেদক:
ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪-এর বিচারক মো. রবিউল আলম ২৩ মার্চ (রোববার) জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আলোচিত ঠিকাদার এস এম গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জি কে শামীম এবং তার মা আয়েশা আক্তারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলার রায় ঘোষণার তারিখ আগামী ২৭ মার্চ নির্ধারণ করেছেন। রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আদালত এই তারিখ নির্ধারণ করেন। আদালতের বেঞ্চ সহকারী বেলাল হোসেন প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
২০১৯ সালের ২১ অক্টোবর দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এর উপ-পরিচালক মো. সালাহউদ্দিন বাদী হয়ে জি কে শামীম ও তার মায়ের বিরুদ্ধে ২৯৭ কোটি ৮ লাখ ৯৯ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলাটি দায়ের করেন। ২০২১ সালের ১৭ জানুয়ারি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা অভিযোগপত্র দাখিল করেন এবং ২০২২ সালের ১৮ অক্টোবর আদালত তাদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন।
মামলাটির যুক্তিতর্ক শুনানি ২২ জানুয়ারি শেষ হলে, আদালত প্রথমে ৩০ জানুয়ারি রায়ের তারিখ নির্ধারণ করেছিলেন। তবে পরে ১৭ ফেব্রুয়ারি নতুন তারিখ নির্ধারণ করা হয়। আসামিপক্ষ থেকে মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে পুনরায় জেরা করার আবেদন করা হলে আদালত তা মঞ্জুর করে এবং মামলাটি সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে ফিরে যায়। পরবর্তীতে ২০ মার্চ যুক্তিতর্ক শুনানি অনুষ্ঠিত হয় এবং আদালত ২৭ মার্চ রায় ঘোষণার নতুন তারিখ নির্ধারণ করেন।
দুদকের অভিযোগপত্র অনুযায়ী, ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে জি কে শামীমের অফিস থেকে ১ কোটি ৮১ লাখ ২৮ হাজার টাকা, ৭ লাখ ৪৭ হাজার টাকার সমপরিমাণ মার্কিন ডলার এবং তার মায়ের নামে ১৬৫ কোটি ২৭ লাখ ৬৫ হাজার টাকার এফডিআর জব্দ করা হয়। এসব সম্পদের কোনো বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি।
এছাড়া, অর্থ পাচার মামলার অভিযোগপত্র অনুযায়ী, ৩৩৭ কোটি টাকার স্থায়ী আমানত রয়েছে শামীমের নামে ১৮০টি ব্যাংক হিসাবে। তার নামে ঢাকায় দুটি বাড়িসহ প্রায় ৫২ কাঠা জমির তথ্য পাওয়া গেছে, যার মূল্য প্রায় ৪১ কোটি টাকা।
২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে শুদ্ধি অভিযানে গ্রেফতার হন জি কে শামীম। তার বিরুদ্ধে অস্ত্র, মাদক ও অর্থ পাচারের অভিযোগে পৃথক মামলা হয়। ২০২২ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় জি কে শামীম ও তার সাত দেহরক্ষীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত। এছাড়া, ২০২৩ সালের ১৭ জুলাই মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের মামলায় শামীমকে ১০ বছর এবং তার দেহরক্ষীদের প্রত্যেককে ৪ বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
আগামী ২৭ মার্চ দুদকের এই মামলার রায়ের মধ্য দিয়ে জি কে শামীম ও তার মায়ের ভবিষ্যতের আইনি অবস্থান স্পষ্ট হবে।