অনলাইন ডেস্ক:
ব্রিটেনের সিটি মিনিস্টার টিউলিপ সিদ্দিক গত মঙ্গলবার মন্ত্রিত্ব থেকে পদত্যাগ করেছেন। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগের পর এই পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হন তিনি। শেখ হাসিনা সরকারের ঘনিষ্ঠ আত্মীয় থেকে উপহার পাওয়া ফ্ল্যাট, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে অর্থ আত্মসাৎ এবং অন্যান্য অভিযোগের পর তাকে পদত্যাগ করতে হয়। তবে পদত্যাগের পরও টিউলিপের বিরুদ্ধে সমালোচনা থামছে না।
বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ধনকুবের ও টেসলার সিইও ইলন মাস্ক সম্প্রতি এই ইস্যুতে তার প্রতিক্রিয়া জানান। এক্স সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে দেওয়া পোস্টে তিনি বলেন, “শিশুকল্যাণের দায়িত্বে থাকা মন্ত্রী নিজেই দুর্নীতিবাজদের রক্ষা করছেন। দুর্নীতিবিরোধী মন্ত্রী নিজেই দুর্নীতিগ্রস্ত।” মাস্কের এই মন্তব্যের পর আরও বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।
টিউলিপ সিদ্দিক তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি দাবি করেছেন, সরকারকে বিভ্রান্তি থেকে রক্ষা করতে তিনি পদত্যাগ করেছেন। তিনি বলেন, “অভিযোগগুলোর কারণে সরকারের কাজকর্মে কোনো ধরনের অসুবিধা যাতে না হয়, সে জন্য আমি পদত্যাগ করেছি।”
টিউলিপ সিদ্দিক ব্রিটেনের ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির সদস্য হিসেবে গত বছর সরকারে আসার পর ইকনোমিক সেক্রেটারি টু দ্য ট্রেজারি অ্যান্ড সিটি মিনিস্টার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তার কাজ ছিল যুক্তরাজ্যের অর্থনৈতিক ব্যবস্থা এবং বাজারের দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ করা। তবে, বাংলাদেশে তার বিরুদ্ধে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে প্রায় ৪০০ কোটি মার্কিন ডলার আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।
পদত্যাগের পর টিউলিপ সিদ্দিক এখন তোপের মুখে পড়েছেন, বিশেষ করে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমারের কাছ থেকে। টিউলিপ স্টারমারের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন। এক লেবার এমপি দ্য গার্ডিয়ানকে বলেছেন, “টিউলিপকে মন্ত্রী বানানো ছিল আত্মঘাতী পদক্ষেপ। সবাই জানতো তার বাংলাদেশি রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে, যাদের অনেক ক্ষমতা ও অর্থ আছে।”
এদিকে, টিউলিপের বিরুদ্ধে লন্ডনে দুটি ফ্ল্যাট উপহার পাওয়ার বিষয়টি গোপন করার অভিযোগ ওঠে। তিনি একসময় দাবি করেছিলেন যে, ফ্ল্যাটগুলো তার বাবা-মা তাকে দিয়েছেন। তবে সম্প্রতি প্রকাশিত সংবাদে জানা যায়, ফ্ল্যাট দুটি তাকে উপহার দিয়েছেন শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ দুই ব্যক্তি—আবাসন ব্যবসায়ী আব্দুল মোতালিফ এবং মঈন গণি। এই তথ্য ফাঁস হওয়ার পরই টিউলিপের উপর পদত্যাগের চাপ বাড়ে।
অবশেষে, নানা বিতর্কের পর টিউলিপ সিদ্দিক পদত্যাগ করেন, এবং তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে।