ট্রাম্পের শুল্কে এক দিনে ৫০ হাজার কোটি রিয়াল হারিয়েছে সৌদি পুঁজিবাজার

অনলাইন ডেস্ক:

যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে পাল্টাপাল্টি শুল্ক আরোপের ফলে সৃষ্ট বাণিজ্যযুদ্ধের প্রভাবে সৌদি আরবের শেয়ারবাজারে একদিনে ৫০ হাজার কোটি রিয়ালের বেশি বাজারমূল্য হারিয়েছে। এই পতন শুধু সৌদি আরবেই নয়, পুরো উপসাগরীয় অঞ্চলের শেয়ারবাজারকেও ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করেছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প উপসাগরীয় পণ্য আমদানির ওপর ১০ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপের পর বাজারে এই পতন শুরু হয়। ৫ এপ্রিল থেকে কার্যকর হওয়া এই শুল্কের কারণে সৌদি আরবের শেয়ারবাজারে ব্যাপক দরপতন দেখা দেয়। ট্রাম্প প্রশাসন জানিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা অন্যায্য বাণিজ্যিক চর্চা মোকাবিলা করতে এই শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।

বাজারের এই পতনের পেছনে বাণিজ্যযুদ্ধ এবং জ্বালানি তেলের মূল্যহ্রাসের পাশাপাশি বৈশ্বিক পুঁজিবাজারের দরপতনও বড় ভূমিকা রেখেছে। সৌদি আরবের শেয়ারবাজারের প্রধান সূচক তাদাউল অল শেয়ার ইনডেক্স (টিএএসআই) ৭০০ পয়েন্ট (৬.১%) কমে ১১ হাজার ২০০ পয়েন্টের নিচে নেমে গেছে। এতে সবচেয়ে বড় অবদান রেখেছে সৌদি আরামকো, যার বাজারদর ৩৪ হাজার কোটি রিয়াল কমে গেছে।

শেয়ারবাজারের আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ সূচক নোমু প্যারালাল মার্কেট ইনডেক্স দুপুর নাগাদ ৫ শতাংশ কমে ১ হাজার ৬০০ পয়েন্ট হারিয়েছে। নোমু সূচকে ১৩টি কোম্পানির শেয়ারের দাম রেকর্ড সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমেছে, যার মধ্যে রয়েছে তাকাত, ওবাইকান গ্লাস, অ্যারাবিকা স্টার, জানা, আমওয়াজ ইন্টারন্যাশনাল, তাইবা, মানাওয়ালা, রেশিও, আল বাতাল ফ্যাক্টরি, লামাসাত, সুলতান ফুড, শামু আল মাদি, এবং হাদাব আল খালিজ।

সৌদি স্টক এক্সচেঞ্জে টিএএসআই ও নোমু সূচকে তালিকাভুক্ত বেশ কিছু কোম্পানি ইতিহাসের সবচেয়ে বড় দরপতন দেখেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু কোম্পানি হল তাকউইন, আল আমার, অ্যারাবিয়ান ড্রিলিং, গালফ জেনারেল, সাইফ গ্যালারি, ফার্স্ট মিলস, ফোর্থ মিলস, আল নাহদি, এন্তাজ, আদ্দিস, আমেরিকানা, তালকো, দার আল-মা’দাত, দেরায়াহ, রায়দান, সামাস্কো, ফাকিয়েহ হেলথ, লুমি, নাইস ওয়ান, নাকি, এবং হার্ফি ফুডস। এসব কোম্পানির শেয়ারের দাম রেকর্ড সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে।

এছাড়া, কাতার, কুয়েত, ওমান ও বাহরাইনসহ অন্যান্য উপসাগরীয় শেয়ারবাজারেও পতন দেখা গেছে। সৌদি শেয়ারবাজারের পতনের পাশাপাশি, বৈশ্বিক অর্থনীতিতে এই বাণিজ্যযুদ্ধের প্রভাব আরও গভীর হতে পারে, যা উপসাগরীয় অঞ্চলের অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতা বাড়াতে পারে।