নিজস্ব প্রতিবেদক:
দেশব্যাপী নারী নিপীড়ন ও নারীর প্রতি সহিংসতার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সংগঠন ‘শিক্ষক নেটওয়ার্ক’। রোববার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে ‘নারীর প্রতি সহিংসতার বিরুদ্ধে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ’ শীর্ষক এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।
সমাবেশে ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক তাসনীম মাহবুব বলেন, “নারী উপদেষ্টারা কোথায়? তারা তো স্বপ্রণোদিত হয়ে মামলা করতে পারেন। নারী বিচারক এবং আইনজীবীরা কেন এই বিষয়ে এগিয়ে আসছেন না? সরকারকে চাপ প্রয়োগ করার ক্ষেত্রে তাঁদের ভূমিকা কেন নেই? এমন কোনো উদ্যোগ আমরা দেখছি না।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নারী শিক্ষার্থীকে হেনস্তার ঘটনায় তিনি বলেন, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন নারী শিক্ষার্থীকে হেনস্তার ঘটনা প্রক্টরের তদারকিতে থাকা উচিত ছিল। কিন্তু তিনি তেমন কোনো পদক্ষেপ নেননি।”
সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক কাজী মারুফুল ইসলাম, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ফাহমিদুল হক, অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক সেলিম রায়হান, কবি ও লেখক ফেরদৌস আরা রুমি, সাফওয়ান আদনান প্রমুখ। সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সামিনা লুৎফা লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন।
অধ্যাপক কাজী মারুফুল ইসলাম বলেন, “নারীর প্রতি সহিংসতা ঘটার পর আমরা শুধু তার বিচার চাই, কিন্তু এর কারণ কী সেটা নিয়ে ভাবছি না। এর পেছনে রয়েছে রাজনীতি, বৈষম্যমূলক অর্থনীতি এবং নিপীড়নমূলক মনস্তত্ব।”
কবি ফেরদৌস আরা রুমি বলেন, “আমাদের অনেক ভালো আইন রয়েছে, তবে সেগুলোর কার্যকারিতা নেই। ধর্ষণের বিচার হতে ১৩ থেকে ১৫ বছর লাগে এবং অনেক ক্ষেত্রে ধর্ষককে বিয়ে দেওয়ার প্রবণতাও রয়েছে। আমরা জানি না আছিয়া বেঁচে থাকলে তার পরের জীবন কেমন হতো।”
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক গীতি আরা নাসরীন বলেন, “নারীদের প্রতি নিপীড়ন শুধুমাত্র হঠাৎ করে হয়নি, এটি সমাজে স্বাভাবিক হয়ে গেছে। নির্যাতনকারী প্রশ্ন করে, কেন নারী পথে বের হলো? এই মনোভাব নির্যাতনকারীদের সাহস দেয়।”
এছাড়া সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক কামরুল হাসান মামুন, নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক জোবাইদা নাসরীন, গণযোগাযোগ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কাজলী শেহরীন ইসলাম, সহকারী অধ্যাপক মার্জিয়া রহমান, সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের প্রাধ্যক্ষ আব্দুল্লাহ আল মামুন প্রমুখ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়, ইন্ডিপেন্ডেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা একই সময়ে এই প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছেন।











