জেলা প্রতিনিধি :
বরগুনার তালতলী উপজেলার সোনাকাটা ইউনিয়নে অবস্থিত নিদ্রা সমুদ্র সৈকত, স্থানীয়ভাবে ‘নিদ্রার চর’ নামে পরিচিত, অদ্বিতীয় প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও ভিন্নধর্মী পরিবেশের জন্য দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে উঠছে পর্যটকদের কাছে।
সৈকতের একদিকে বঙ্গোপসাগরের নীল জলরাশি, অন্যদিকে নদীর প্রবাহ এবং মাঝখানে কেওড়া ও ঝাউবনের সবুজ বেষ্টনী একে দিয়েছে অনন্য বৈশিষ্ট্য। জোয়ার-ভাঁটার খেলা, সবুজ ঘাসে ঢাকা প্রান্তর এবং শ্বাসমূলের জঙ্গলে ঘেরা এই এলাকা প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য যেন এক স্বর্গীয় অনুভূতির জায়গা।
স্থানীয় পর্যটন উদ্যোক্তা আরিফ রহমান জানান, “নিদ্রা সৈকতের প্রাকৃতিক বৈচিত্র্য ও সৌন্দর্য পর্যটকদের সহজেই মুগ্ধ করে। এখানে যদি পর্যটন অবকাঠামোর উন্নয়ন করা যায়, তাহলে এটি জাতীয় পর্যটন মানচিত্রে গুরুত্বপূর্ণ স্থান করে নিতে পারবে।”
তালতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উম্মে সালমা বলেন, “নিদ্রা সৈকতকে ঘিরে টেকসই পর্যটন গড়ে তুলতে সরকার নানা উদ্যোগ গ্রহণ করছে। পর্যটকদের নিরাপত্তা এবং প্রাথমিক সুবিধা নিশ্চিত করতে প্রশাসন কাজ করে যাচ্ছে।”
এই সৈকতের আশপাশেই রয়েছে জনপ্রিয় শুভসন্ধ্যা সৈকত, যেখানে প্রতি বছর আয়োজন হয় জোছনা উৎসবের। কাছেই রয়েছে টেংরাগিরি ম্যানগ্রোভ বন, ফাতরার চর ও সোনাকাটা ইকোপার্ক, যা নিদ্রাকে একটি ‘ট্যুরিস্ট প্যাকেজ’ গন্তব্য হিসেবে বিশেষ গুরুত্ব এনে দিয়েছে।
জেলা পর্যটন উদ্যোক্তা উন্নয়ন কমিটির সাধারণ সম্পাদক আরিফ খান জানান, “নিদ্রা সৈকত দক্ষিণাঞ্চলের গর্ব হতে পারে। আমরা স্থানীয়ভাবে সৈকত পরিচ্ছন্ন রাখা, পর্যটকদের গাইড করা ও স্বেচ্ছাসেবী ব্যবস্থাপনার চেষ্টা করছি। তবে স্থায়ী অবকাঠামোর অভাবে এটি পিছিয়ে পড়ছে।”
তিনি আরও বলেন, “প্রচারের অভাবই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। সরকার যদি এটিকে সরকারি পর্যটন স্পট হিসেবে স্বীকৃতি দেয়, তবে এখানে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে।”
যেভাবে যাবেন:
ঢাকা থেকে সড়কপথে বাস বা নিজস্ব গাড়িতে তালতলী হয়ে সোনাকাটা ইউনিয়নের নিদ্রা সৈকতে যাওয়া যায়। নৌপথে বরগুনা বা আমতলীতে গিয়ে সেখান থেকে মোটরসাইকেল বা ভাড়ায় চালিত যানবাহনে করে সৈকতে পৌঁছানো সম্ভব।
তালতলীতে রয়েছে আবাসিক হোটেল ও জেলা পরিষদের ডাকবাংলোতে রাতযাপনের ব্যবস্থা।