জেলা প্রতিনিধি :
কিশোরগঞ্জ শহরের ঐতিহ্যবাহী পাগলা মসজিদের ১১টি দানবাক্স খুলে পাওয়া গেছে ২৮ বস্তা ভর্তি টাকা। সেই সঙ্গে মিলেছে বিদেশি মুদ্রা, বিভিন্ন ধরনের অলংকার এবং বহু চিরকুট। শনিবার সকাল ৭টায় জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে মসজিদ কমপ্লেক্সে আনুষ্ঠানিকভাবে দানবাক্স খোলার কাজ শুরু হয়। জেলা প্রশাসক ও মসজিদ কমিটির সভাপতি ফৌজিয়া খান, পুলিশ সুপার মো. হাছান চৌধুরী, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মিজাবে রহমত, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জেসমিন আক্তার এবং রূপালী ব্যাংকের সহকারী মহাব্যবস্থাপক মো. রফিকুল ইসলাম এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
দানবাক্সগুলো খোলার পর, প্রাপ্ত টাকা ও অন্যান্য সামগ্রী প্রথমে পৃথক বস্তায় ভরে মসজিদের দোতলার মেঝেতে ঢেলে গণনার জন্য আলাদা করা হয়। উল্লেখযোগ্য যে, প্রতি তিন মাস অন্তর দানবাক্স খোলার নিয়ম থাকলেও এবার রমজানের কারণে তা চার মাস ১২ দিন পর খোলা হলো। এর আগে, গত বছর ৩০ নভেম্বর ১১টি দানবাক্স থেকে ২৯ বস্তা টাকা পাওয়া গিয়েছিল, যা গণনা শেষে ৮ কোটি ২১ লাখ ৩৪ হাজার ৩০৪ টাকা হিসেবে নির্ধারিত হয়েছিল এবং পরবর্তীতে তা রূপালী ব্যাংকে মসজিদের অ্যাকাউন্টে জমা দেওয়া হয়।
জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান জানিয়েছেন, দানবাক্সে প্রাপ্ত অর্থ শুধু মসজিদের দৈনন্দিন খরচেই নয়, ব্যবহার করা হয় অসহায় রোগীদের চিকিৎসা সহায়তা, মসজিদ কমপ্লেক্সের মাদ্রাসায় অধ্যয়নরত এতিম ছাত্রদের ভরণপোষণ এবং মসজিদের অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য। এবার এই অর্থ থেকে পুরুষ ও মহিলাদের জন্য নতুন দুটি নামাজের শেড নির্মাণ এবং মসজিদ কমপ্লেক্সের সম্প্রসারণ কাজেও অর্থ ব্যয় করা হবে।
দেশ-বিদেশের বহু মানুষ মনে করেন, পাগলা মসজিদে দান করলে তাদের মনোবাসনা পূর্ণ হয়। সেই বিশ্বাস থেকেই এই মসজিদে প্রতিবছর কোটি কোটি টাকা এবং মূল্যবান সামগ্রী দান করে থাকেন ভক্তরা। ফলে পাগলা মসজিদ বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ ধর্মীয় দানকেন্দ্র হিসেবে আজ ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেছে।