জেলা প্রতিনিধি :
প্রচণ্ড তাপদাহ ও অনাবৃষ্টির কারণে ফেনী জেলায় ভূগর্ভস্থ পানির স্তর ব্যাপকভাবে নেমে গেছে। এতে দেখা দিয়েছে সুপেয় পানির তীব্র সংকট। জেলার বিভিন্ন উপজেলার প্রায় ১ লাখ ৬৭ হাজার ৩৮৬টি নলকূপে পানি উঠছে না। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা একে জনস্বাস্থ্যের জন্য বড় হুমকি হিসেবে দেখছেন।
জেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের তথ্যমতে, ফেনীতে মোট ৩৬ হাজার ৮১১টি সরকারি নলকূপ রয়েছে। এর মধ্যে ৯ হাজার ৮৭১টি দীর্ঘদিন ধরে অকেজো। চালু ২৬ হাজার ৯৪১টি নলকূপের প্রায় অর্ধেকেই বর্তমানে পানি পাওয়া যাচ্ছে না। এছাড়া ব্যক্তি উদ্যোগে স্থাপিত প্রায় দুই লক্ষাধিক নলকূপের অর্ধেকের বেশি এখন অকার্যকর হয়ে পড়েছে।
ফুলগাজী, সোনাগাজী, পরশুরাম, ছাগলনাইয়া ও সদর উপজেলায় সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, অধিকাংশ অগভীর নলকূপ থেকে একেবারেই পানি উঠছে না। অনেক এলাকাবাসী বাধ্য হয়ে দূর-দূরান্তের জলাশয় থেকে পানি সংগ্রহ করছেন। এতে রান্নাবান্না ও দৈনন্দিন কাজে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
ফুলগাজী উপজেলার উপসহকারী প্রকৌশলী মো. আবদুল্লাহ আরমান জানান, উপজেলার ৮৭টি গ্রামের প্রায় ৭০ শতাংশ নলকূপে পানি নেই। বিকল্প কোনো ব্যবস্থাও করা যাচ্ছে না। বৃষ্টিই একমাত্র সমাধান।
এদিকে, কৃষকদের উদ্বেগ আরও বেড়েছে। পুকুর, খাল, জলাশয় শুকিয়ে যাওয়ায় সেচ কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে বোরো ধানে দেখা দিচ্ছে চিটা হওয়ার আশঙ্কা। কৃষক করিমুল্লাহ জানান, “জলাধার শুকিয়ে গেছে, এখন ধানে থোর উঠলেও দানা হচ্ছে না। স্কিম থাকা সত্ত্বেও পানি পাচ্ছি না।”
ফেনী জেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শফিউল হক বলেন, “ভূগর্ভস্থ পানির অতিরিক্ত উত্তোলন ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে প্রতি বছর পানির স্তর নিচে নেমে যাচ্ছে। ফলে শুষ্ক মৌসুমে অধিকাংশ নলকূপে পানি পাওয়া যায় না।”
জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম জানান, সংকট নিরসনে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সঙ্গে সমন্বয় করে তালিকা অনুযায়ী দূরবর্তী এলাকায় পানি সরবরাহের উদ্যোগ নেওয়া হবে।