বাংলাদেশের পণ্য আমদানিতে ৩৭% শুল্ক আরোপ করল যুক্তরাষ্ট্র

নিজস্ব প্রতিবেদক:

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন ‘পারস্পরিক শুল্ক’ নীতির আওতায় বাংলাদেশ থেকে আমদানি হওয়া পণ্যের ওপর ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) হোয়াইট হাউস থেকে প্রকাশিত এক তালিকায় মার্কিন সরকার দাবি করেছে যে, বাংলাদেশ ইতোমধ্যে আমেরিকান পণ্যের ওপর ৭৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে। এর প্রতিক্রিয়া হিসেবে, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশি পণ্যের ওপর ৩৭ শতাংশ ‘ছাড়প্রাপ্ত পারস্পরিক শুল্ক’ আরোপ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

এই পদক্ষেপটি আমেরিকার স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে নেওয়া হয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসন দাবি করেছে, অন্যান্য দেশগুলো মার্কিন পণ্য রফতানির ক্ষেত্রে ব্যাপক বাধা তৈরি করে রেখেছে, এবং এ ধরনের ‘অন্যায় বাণিজ্য চর্চা’ প্রতিরোধ করতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের নতুন বাণিজ্যনীতিতে সব ধরনের আমদানির ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপের একটি ভিত্তিরেখা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ ছাড়াও, যেসব দেশ মার্কিন পণ্য রফতানির ক্ষেত্রে মুদ্রার অপব্যবহার, সুরক্ষাবাদী নীতি কিংবা অন্যান্য অ-শুল্ক বাধা তৈরি করে, তাদের বিরুদ্ধে উচ্চমাত্রায় শুল্ক আরোপ করা হবে।

এ আকস্মিক শুল্ক আরোপ বাংলাদেশের অর্থনীতির ওপর বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে, কারণ বাংলাদেশের অর্থনীতি ব্যাপকভাবে যুক্তরাষ্ট্রে রফতানির ওপর নির্ভরশীল, বিশেষ করে তৈরি পোশাক খাতে। যুক্তরাষ্ট্র এককভাবে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রফতানি গন্তব্য।

শিল্পখাত সংশ্লিষ্টরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে, এই শুল্ক আরোপের ফলে বাংলাদেশের প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা কিছুটা কমে আসতে পারে। একই সঙ্গে ভারতসহ দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য বাণিজ্য অংশীদার দেশগুলোর ওপরও একই ধরনের শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।

ভারতীয় পণ্যের ওপর ২৬ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে, যেখানে মার্কিন পণ্য রফতানিতে ভারতে ৫২ শতাংশ বাধা রয়েছে। পাকিস্তানের ওপর ২৯ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে, তাদের দাবি, পাকিস্তানি বাজারে মার্কিন পণ্যের জন্য ৫৮ শতাংশ বাণিজ্য বাধা রয়েছে।

হোয়াইট হাউস দাবি করেছে, গত কয়েক দশক ধরে একপাক্ষিক বাণিজ্য সম্পর্ক চলে আসছিল, যা অনেক আগেই সংশোধন করা উচিত ছিল। তবে, সমালোচকরা মনে করছেন যে, এই পদক্ষেপের কারণে অন্য দেশগুলো পাল্টা পদক্ষেপ নিতে পারে, যার ফলে মার্কিন ব্যবসা এবং পরিবারের খরচ বেড়ে যেতে পারে।