বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে সহিংসতায় বাংলাদেশি নাগরিকের প্রাণহানি বাড়ছে

নিজস্ব প্রতিবেদক:

বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের স্থল সীমান্ত দীর্ঘ, কিন্তু প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সঙ্গে সীমান্ত এলাকায় সহিংসতার ঘটনা মাঝে মাঝেই ঘটে। এই সহিংসতার কারণে মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং নানা প্রশ্ন উঠছে। বাংলাদেশি নাগরিকদের প্রাণহানির সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে, যা সীমান্তে চলমান উত্তেজনা এবং চ্যালেঞ্জের বিষয়ে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদর দপ্তরের ২০২৩ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ওই বছর সীমান্তে পৃথক ঘটনাগুলোর মধ্যে ২৫ জন বাংলাদেশি প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে ১৯ জন ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) সদস্যের গুলিতে এবং ৬ জন ভারতীয় নাগরিকের গুলিতে নিহত হয়েছেন। এই ঘটনার ফলে বিএসএফের গুলির ব্যবহারের পাশাপাশি ভারতীয় নাগরিকদের জড়িত সহিংসতার উদ্বেগ বৃদ্ধি পেয়েছে।

এ বছরও এই প্রবণতা অব্যাহত রয়েছে। ২০২৪ সালের প্রথম দুই মাসে, ১ জানুয়ারি থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আরও তিনজন বাংলাদেশি নাগরিক নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে একজন বিএসএফ সদস্যের গুলিতে এবং দুজন ভারতীয় নাগরিকের হাতে প্রাণ হারান।

২০১৪ সাল থেকে এখন পর্যন্ত, বিএসএফের হাতে ২২০ জন বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন বলে জানায় বিজিবি। একই সময়ে ভারতীয় নাগরিকদের হাতে নিহত হন আরও ৫৭ জন বাংলাদেশি নাগরিক। সীমান্তে চলমান সহিংসতা এবং হত্যাকাণ্ড বন্ধে বার বার আশ্বাস দেওয়া হলেও, এসব হত্যাকাণ্ডের সংখ্যা কমছে না।

মানবাধিকার সংস্থাগুলো উভয় দেশের সরকারের প্রতি সীমান্তে সহিংসতা কমানোর জন্য কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে বলছে, যাতে সীমান্ত সুরক্ষা প্রটোকল আরও জোরদার হয় এবং হত্যাকাণ্ডের দায়ীদের শাস্তি নিশ্চিত করা যায়।

বিজিবির কর্মকর্তারা জানান, সীমান্তে সংঘর্ষের বেশিরভাগ ঘটনা চোরাচালান সম্পর্কিত এবং এর সঙ্গে যুক্ত চোরাচালান সিন্ডিকেটের সদস্যরা। তবে বিজিবি আন্তর্জাতিক আইন মেনে সীমান্তে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে এবং অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রমকারী ভারতীয় নাগরিকদের আটক করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে।

কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকয় সীমান্ত সম্পর্কিত হতাহত রোধের বিষয়টি অগ্রাধিকারে রয়েছে। উভয় দেশকে মানবাধিকার সমুন্নত রাখতে এবং সীমান্তে বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য ক্রমবর্ধমান চাপের মুখোমুখি হতে হচ্ছে।