নিজস্ব প্রতিবেদক:
বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বাংলাদেশে শাখা ক্যাম্পাস স্থাপনের অনুমতি দেওয়ার জন্য একটি সুস্পষ্ট, কঠোর এবং মাননির্ভর নীতিমালা তৈরিতে কাজ করছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। এই নীতিমালা তৈরির দায়িত্বে রয়েছে একটি হাই-পাওয়ার কমিটি, যার নেতৃত্ব দিচ্ছেন বুয়েটের উপাচার্য। কমিটিতে ঢাবি, বুয়েট, নর্থ সাউথ ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশিষ্ট অধ্যাপকরা অন্তর্ভুক্ত আছেন।
ইউজিসির বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়বিষয়ক দায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন ইউএনবিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানান, নীতিমালাটি চূড়ান্ত হলে স্বীকৃত ও মানসম্পন্ন বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আবেদন বিবেচনা করে অনুমোদন দেওয়া হবে। তবে উচ্চশিক্ষাকে বাণিজ্যিকীকরণের হাত থেকে রক্ষা করতে এবং গুণগত মান নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সতর্কতা অবলম্বন করা হবে।
ড. আনোয়ার হোসেন বলেন, “বিদেশি ক্যাম্পাস এলে বাংলাদেশের কতটুকু উপকার হবে—সব দিক বিবেচনায় রাখা হচ্ছে। হাই-পাওয়ার কমিটি এই বিষয়ে গাইডলাইন পলিসি তৈরিতে কাজ করছে। সাব-কমিটির নেতৃত্বে আমি আছি।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা এই বিষয়ে ইতিবাচক। তবে দেখছি শিক্ষার্থীরা যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয় এবং দেশের পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যেন অপ্রত্যাশিত চাপে না পড়ে।” তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের জীবনমান, বেতন কাঠামো ও গবেষণার সুযোগ সন্তোষজনক নয়, এবং বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয় এলে শিক্ষক সংকট আরও বাড়তে পারে। সবদিক বিবেচনায় নীতিমালা তৈরি হবে বলে জানান তিনি।
ইউজিসি সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে ২০১৪ সালের ‘বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা বা স্টাডি সেন্টার পরিচালনা বিধিমালা’ সংশোধনের কাজ চলছে। আগের বিধিমালায় অস্পষ্টতা ও সীমাবদ্ধতা থাকায় তা সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। নতুন নীতিমালায় স্টাডি সেন্টার নয়, শুধুমাত্র পূর্ণাঙ্গ শাখা ক্যাম্পাস স্থাপনের অনুমতি দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এতে নির্দিষ্ট শর্তাবলী যুক্ত করা হয়েছে—যেমন: অন্তত ২৫ হাজার বর্গফুট জায়গা, পূর্ণকালীন শিক্ষক নিয়োগ, ৫ কোটি টাকার ফিক্সড ডিপোজিট এবং ১০ লাখ টাকার অনুমোদন ফি।
এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য হচ্ছে দেশের উচ্চশিক্ষার মান নিশ্চিত করা এবং বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয় ব্যবসার নামে যেন শিক্ষার গুণগতমানকে ক্ষতিগ্রস্ত না করে, তা নিশ্চিত করা।
উল্লেখ্য, মালয়েশিয়ার ইউসিএসসি ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশে প্রথম বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ইউজিসি ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পেয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি ইতোমধ্যে ঢাকায় তাদের কার্যক্রম শুরু করেছে।