জেলা প্রতিনিধি :
বিয়ানীবাজারে শীতকাল এলেই যা একসময় ছিল একটি স্বাভাবিক দৃশ্য, তা এখন একেবারেই অতীত হয়ে গেছে। অতীতে, শীতের মৌসুমে বিয়ানীবাজারের জলাশয়, খাল, বিল, নদী ও নালাগুলো ছিল অতিথি পাখির কলরবে মুখরিত। কিন্তু এখন পরিস্থিতি এমন যে, এসব জায়গায় আর অতিথি পাখির দেখা মিলছে না।
একসময় শীতের মৌসুমে উজান ও নিচু অঞ্চলগুলোতে পাখির কিচিরমিচির ছিল এক আকর্ষণীয় দৃশ্য। তবে বর্তমানে এসব পাখির সংকট ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিয়ানীবাজারের বনভূমি ধ্বংস, জলাশয়ের সংকোচন, এবং ভূমির ওপর কংক্রিটের আধিপত্য বেড়ে যাওয়ার কারণে পাখির আবাসস্থল সংকুচিত হয়ে পড়েছে। গ্রামাঞ্চলে আগের মতো পাখির কিচিরমিচিরের শব্দ আর শোনা যায় না।
পাখিদের খাদ্যাভ্যাসও পরিবর্তিত হয়েছে, কারণ ফসলের খেতে কীটনাশকের ব্যবহার বেড়েছে এবং জলাশয়ের পানি শুকিয়ে গেছে, যার ফলে অতিথি পাখির পছন্দের খাদ্য সংকুচিত হয়ে পড়েছে। শিকারও একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আইনের থাকলেও, পাখি শিকার বন্ধ করা সম্ভব হয়নি। স্থানীয় শিকারীরা ধানক্ষেতে বিষ প্রয়োগ ও ফাঁদ পেতে পাখি শিকার করছেন।
বিয়ানীবাজার উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ মবিন হাই বলেন, আধুনিক প্রযুক্তি, নগরায়ণ, বনভূমি উজাড়, জলবায়ু পরিবর্তন এবং অবাধ শিকার এসব পাখির বিলুপ্তির জন্য দায়ী। পাখির আবাসস্থল সংকুচিত এবং খাদ্যের অভাবও তাদের আগমনে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এদিকে, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লোকমান হেকিম জানান, জলবায়ু পরিবর্তন ও পাখির খাদ্য সংকট বৃদ্ধি পাওয়ার পাশাপাশি, পূর্বের মতো শীতকালে অতিথি পাখির আগমন কমে গেছে।
বিয়ানীবাজারের পাখি সংখ্যা হ্রাসের কারণগুলো প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে, এবং এটি শুধু পাখিদের জন্য নয়, পুরো পরিবেশের জন্যও এক বিপর্যয়ের আলামত হয়ে দাঁড়িয়েছে।