বৈদ্যুতিক শক সরঞ্জামের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে আন্তর্জাতিক চুক্তি

অনলাইন ডেস্ক:

বৈদ্যুতিক শক সরঞ্জাম ব্যবহারের বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করতে বিশ্বব্যাপী আইনত বাধ্যতামূলক একটি চুক্তির আহ্বান জানিয়েছে মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। সংস্থাটি তাদের সর্বশেষ প্রতিবেদন ‘আমি এখনো রাতে ঘুমাতে পারি না – বৈদ্যুতিক শক সরঞ্জামের বিশ্বব্যাপী অপব্যবহার’ এ দাবি করেছে যে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলি এ ধরনের সরঞ্জাম ব্যবহার করে নির্যাতন এবং দুর্ব্যবহার করছে, যা মানবাধিকারের স্পষ্ট লঙ্ঘন।

এতে বলা হয়েছে, বিশেষত কারাগার, মানসিক স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান, অভিবাসী এবং শরণার্থী ডিটেনশন সেন্টারগুলোতে এসব সরঞ্জামের অপব্যবহার অত্যন্ত উদ্বেগজনক। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের সামরিক, নিরাপত্তা এবং পুলিশিং ইস্যু গবেষক প্যাট্রিক উইলকেন জানান, বৈদ্যুতিক শক সরঞ্জাম ব্যবহার করলে গুরুতর শারীরিক আঘাত, মানসিক যন্ত্রণার পাশাপাশি মৃত্যুও ঘটতে পারে। তিনি বলেন, “এ ধরনের সরঞ্জামগুলো সরাসরি শক দেয় এবং দীর্ঘস্থায়ী আঘাত সৃষ্টি করতে পারে, যা নির্যাতিত ব্যক্তির জন্য মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে।”

গবেষণায় পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, পিইএসডব্লিউ (প্রজেক্টাইল ইলেকট্রিক শক ওয়েপনস) সারা বিশ্বে ক্রমবর্ধমানভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে, যা অনেক সময় বৈধভাবে ব্যবহৃত হলেও, এর অপব্যবহারও ঘটছে। উইলকেন দাবি করেন, “এ ধরনের সরঞ্জামগুলোর ব্যবহার অবিলম্বে নিষিদ্ধ করা উচিত এবং পিইএসডব্লিউকে কঠোর মানবাধিকার-ভিত্তিক বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণের আওতায় আনা উচিত।”

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল আরও বলেছে, বৈদ্যুতিক শক সরঞ্জামের উৎপাদন ও ব্যবসা নিয়ন্ত্রণে কোনো আন্তর্জাতিক প্রবিধান নেই, যার ফলে এসব সরঞ্জাম দুর্ব্যবহারের শিকার হচ্ছে। বৈদ্যুতিক শক সরঞ্জামের ব্যবহার শারীরিক ও মানসিক আঘাতের গুরুতর ঝুঁকি তৈরি করে, বিশেষত মাথার খুলি, চোখ ও অভ্যন্তরীণ অঙ্গের ক্ষেত্রে মারাত্মক ক্ষতি হয়।

এছাড়া, এই গবেষণায় জানা গেছে যে, চীন, ভারত, এবং যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশে অন্তত ১৯৭টি কোম্পানি আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলির জন্য সরাসরি বৈদ্যুতিক শক সরঞ্জাম তৈরি করে। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এই বিষয়টি নিয়ন্ত্রণের জন্য আন্তর্জাতিক আইন প্রণয়ন করতে একটি জোরালো আহ্বান জানিয়েছে।