অনলাইন ডেস্ক:
ভয়েস অফ আমেরিকা (VOA) এবং কয়েকটি সহযোগী গণমাধ্যম বন্ধের সিদ্ধান্তকে অবৈধ দাবি করে ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে ফেডারেল আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। শুক্রবার (২১ মার্চ) রাতে নিউ ইয়র্কের ইউএস ডিস্ট্রিক্ট কোর্টে এই মামলা করা হয়।
মামলায় বলা হয়েছে, ট্রাম্প প্রশাসন বেআইনিভাবে ভয়েস অফ আমেরিকা বন্ধ করে দিয়েছে এবং এটি আবার চালু করতে আদালতের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। মামলায় আরও দাবি করা হয়, এই গণমাধ্যম বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানুষকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করে আসছে, যেখানে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নেই।
মামলায় বাদী হিসেবে ভয়েস অফ আমেরিকার সাংবাদিক, রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস এবং কিছু ইউনিয়ন দাঁড়িয়েছে। পক্ষান্তরে, ইউএস এজেন্সি ফর গ্লোবাল মিডিয়া, কারি লেক ও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ব্যর্থ প্রতিনিধি অ্যারিজোনা বিবাদী হিসেবে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, ‘‘বিশ্বের অনেক অংশে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ হারিয়েছে এবং এই শূন্যতা পূরণের জন্য এখন শুধু রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রিত সংবাদ মাধ্যমগুলোই অবশিষ্ট রয়েছে।’’
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে ভয়েস অফ আমেরিকা বিশ্বজুড়ে কর্তৃত্ববাদী দেশগুলোর বিরুদ্ধে একটি গুরুত্বপূর্ণ বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ সরবরাহকারী হিসেবে পরিচিত। এটি কংগ্রেসের অর্থায়নে পরিচালিত হয় এবং এর মূল উদ্দেশ্য হলো গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও সাংবাদিকতার নীতির প্রতি সম্মান বজায় রাখা।
রিপাবলিকানরা অভিযোগ করেছেন যে ভয়েস অফ আমেরিকার সংবাদ শাখায় বামপন্থী প্রচারণা প্রভাব ফেলেছে। তবে এর পরিচালনাকারীরা বলেন, এই অভিযোগ বাস্তব নয়।
মামলায় আরও বলা হয়, ‘‘দ্বিতীয় মেয়াদে ট্রাম্প প্রশাসন এটি সম্পূর্ণ বন্ধ করার প্রক্রিয়া নিয়েছে এবং এটি একটি বিশেষ কৌশল হাতে নিয়েছে।’’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে, ভয়েস অফ আমেরিকা বা ইউএস এজেন্সি ফর গ্লোবাল মিডিয়ার পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
এদিকে, রেডিও ফ্রি এশিয়ার মুখপাত্র রোহিত মহাজন জানান, শুক্রবারের সিদ্ধান্তের পর তাদের ওয়াশিংটন অফিসের প্রায় ৭৫ শতাংশ কর্মীকে অবৈতনিক ছুটিতে পাঠানো হয়েছে এবং কিছু ফ্রিল্যান্স চুক্তিও বাতিল করা হয়েছে।
এছাড়া, রেডিও ফ্রি ইউরোপ এবং রেডিও লিবার্টি গত মঙ্গলবার ইউএস ডিস্ট্রিক্ট কোর্টে মামলাটি দায়ের করেছে, যাতে তাদের তহবিল অব্যাহত রাখা হয় এবং কাজকর্ম বন্ধ না হয়ে যায়।
এই মামলার মাধ্যমে সংস্থাগুলো দাবি করছে যে, কংগ্রেস থেকে বরাদ্দকৃত তহবিল ছাড়া তারা তাদের সাংবাদিকতা কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারবে না, এবং এর ফলে তাদের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়বে।