অনলাইন ডেস্ক:
যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাম্প প্রশাসন জরুরি খাদ্য সহায়তা বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা বিশ্বের লাখ লাখ ঝুঁকিতে থাকা মানুষের জন্য মৃত্যুদণ্ডের সমান বলে অভিহিত করেছে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি)। আফগানিস্তান, সিরিয়া, ইয়েমেনসহ আরও ১১টি দরিদ্র দেশকে জরুরি খাদ্য সহায়তা প্রদান করে আসছিল যুক্তরাষ্ট্র, যা বর্তমানে বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির এক কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে (এপি) জানিয়েছেন, ট্রাম্প প্রশাসনের এই সিদ্ধান্ত এসব দেশে চলমান দীর্ঘ সময়ের যুদ্ধ ও মানবিক সংকটের মধ্যে থাকা লাখ লাখ মানুষের জীবনকে গুরুতর ঝুঁকিতে ফেলবে। ডব্লিউএফপি সোমবার তাদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের জন্য আহ্বান জানিয়েছে। তারা উল্লেখ করেছে, “নতুন এই সিদ্ধান্ত চরম ক্ষুধা ও অনাহারে থাকা লাখ লাখ মানুষের জন্য মৃত্যুদণ্ডের সমান হতে পারে।”
যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ইউএস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট (USAID) পরিচালিত কিছু মানবিক কর্মসূচি লক্ষ্য করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের পক্ষ থেকে এখনও এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির প্রধান সিন্ডি ম্যাককেইন এই কাটছাঁটের বিষয়ে সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করে বলেছেন, “এই সিদ্ধান্ত বৈশ্বিক স্থিতিশীলতা নষ্ট করবে।” এদিকে, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এবং অন্যান্য প্রশাসনিক কর্মকর্তারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে, জরুরি খাদ্য কর্মসূচি এবং অন্যান্য জীবন রক্ষাকারী সহায়তা কাটছাঁট করা হবে না।
এই সহায়তা বন্ধের সিদ্ধান্তের ফলে বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ জনগণ এবং শিবিরগুলো বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বিশেষত, আল-হোল শিবির, যেখানে হাজার হাজার ইসলামিক স্টেট যোদ্ধা এবং তাদের পরিবারকে নিরাপত্তা দেওয়া হয়, তা সংকটে পড়তে পারে। শিবিরে দ্রুত বিদ্রোহ বা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য সহায়তা বন্ধের ফলে আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থাগুলোর কাজ বিপর্যস্ত হয়ে পড়বে। গত বছর, যুক্তরাষ্ট্র ডব্লিউএফপিকে অনুদানের ৯৮০ কোটি ডলারের মধ্যে ৪৫০ কোটি ডলার সরবরাহ করেছিল, যা ছিল সংস্থাটির প্রধান অর্থদাতা।