নিজস্ব প্রতিবেদক:
বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক, প্রাবন্ধিক এবং এমেরিটাস অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাতে আজ শনিবার সকাল থেকে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সর্বস্তরের মানুষের ঢল নামে। মুষলধারে বৃষ্টিও থামাতে পারেনি শিক্ষক-অনুরাগী, সাহিত্যপ্রেমী ও সাধারণ মানুষের ভালোবাসার জোয়ার।
শুক্রবার (১০ অক্টোবর) বিকেল ৫টায় রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭২ বছর।
আজ সকাল সাড়ে ১০টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে প্রথম জানাজা ও শ্রদ্ধা নিবেদন অনুষ্ঠিত হয়। এরপর মরদেহ আনা হয় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে, যেখানে সরকারি কর্মকর্তা, শিক্ষক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, শিক্ষার্থী এবং দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা মানুষ তাঁর প্রতি ফুলেল শ্রদ্ধা জানান।
শ্রদ্ধা জানায় বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন। এর মধ্যে ছিল—প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর, কপিরাইট অফিস, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি ও নৃত্যকলা বিভাগ, কালি ও কলম, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র, জাতীয় জাদুঘর, ছায়ানট, বাংলা একাডেমি, জাসদ, বাসদসহ আরও অনেকে।
প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ প্রফেসর সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, “মনজুর ছিলেন শুধু একজন মেধাবী ছাত্র নন, ছিলেন অসাধারণ শিক্ষকও। তিনি শিক্ষকতার উত্তরাধিকার গৌরবের সঙ্গে বহন করেছেন। তাঁর ছাত্র-ছাত্রীরা তাঁকে গভীরভাবে ভালোবাসতেন।”
তিনি আরও বলেন, “তিনি ছিলেন উজ্জ্বল কথাসাহিত্যিক। সাহিত্যিক ও শিল্পসমালোচক হিসেবে তাঁর অবদান দীর্ঘস্থায়ী হবে। শেক্সপিয়ারের নাটক অনুবাদ থেকে শুরু করে ইংরেজিতে মৌলিক সাহিত্য রচনা—সবক্ষেত্রেই তাঁর দক্ষতার ছাপ রয়েছে। তাঁর মৃত্যু আমাদের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি।”
বাসস-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদক মাহবুব মোর্শেদ বলেন, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক শিক্ষক আছেন, তবে সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম ছিলেন এমন একজন, যিনি পুরো জাতির কাছে বুদ্ধিজীবী হিসেবে সম্মানিত ছিলেন। তিনি তাঁর সাহিত্যকর্ম ও শিক্ষকতার মাধ্যমে বহু তরুণ মনকে গড়ে তুলেছেন। তাঁর লেখায় নাগরিক জীবনের গভীর সংকট উঠে এসেছে, যা খুব কম লেখকই করতে পেরেছেন।”
তিনি বলেন, “তাঁর প্রয়াণে জাতি একজন মূল্যবান সম্পদ হারিয়েছে। তবে তাঁর কাজ আমাদের মাঝে চিরকাল জীবন্ত থাকবে।”











