জেলা প্রতিনিধি :
এ বছর শ্রীনগর উপজেলায় আলুর বাম্পার ফলন হলেও কৃষকদের মুখে হাসি নেই। আলুর দাম কম থাকায় তারা নানা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন। উপজেলার প্রায় ১ হাজার ৯৫০ হেক্টরের বেশি জমিতে আলু আবাদ করা হয়েছে এবং উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় ৫৮ হাজার ৫০০ টন। যদিও আলুর ফলন নিয়ে কৃষকরা সন্তুষ্ট, তবে পাইকারি বাজারে আলুর দাম কম থাকায় তাদের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে।
এছাড়া, আবহাওয়া বার্তায় বৃষ্টির পূর্বাভাস থাকার কারণে উত্তোলিত আলু ভিজে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, যা কৃষকদের দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্তমানে, আলুর উৎপাদন খরচ বাজারমূল্যের চেয়ে বেশি হওয়ায় কৃষকরা তা বিক্রি করতে আগ্রহী নন। স্থানীয় হাট-বাজারে প্রকার ভেদে আলুর কেজি ২২-২৫ টাকা, এবং পাইকারি বাজারে এটি ১৫-১৭ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
কৃষকরা অভিযোগ করেছেন, সিন্ডিকেটের কারণে আলুবীজ ও অন্যান্য কৃষি উপকরণের দাম আকাশচুম্বী হয়েছে। প্রতি কানি (১৪০ শতাংশ) জমিতে আলু চাষে প্রায় পৌনে ৪ লাখ টাকা ব্যয় হচ্ছে। তবে, প্রতি কানি জমিতে ৪০০ মণ আলু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও, গড়ে কানি প্রতি ৩০০ মণ আলু পাওয়া যাচ্ছে। এতে আলুর উৎপাদন খরচ প্রায় ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা প্রতি মণ, যা কৃষকদের জন্য লোকসানের আশঙ্কা তৈরি করেছে।
এছাড়া, এলাকায় হিমাগারে আলু সংরক্ষণ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। কারণ, অন্য জেলা থেকে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে আলু এনে স্থানীয় হিমাগারে ভরা হচ্ছে। বর্তমানে, শ্রীনগরে তিনটি সচল হিমাগার রয়েছে, তবে আলুর উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৫৮ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন হওয়ায় স্থান সংকুলান সমস্যা দেখা দিয়েছে।
এ বছর, হিমাগারে ৫০ কেজি প্রতি বস্তা আলু সংরক্ষণে চার্জ ৩০০ টাকা ধরা হয়েছে। তবে, হিমাগারে আলু রাখা নিয়ে কৃষকরা উদ্বিগ্ন, কারণ তাদের চাহিদা অনুযায়ী স্থান ও শ্রমিকের সংকট রয়েছে।
শ্রীনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহসিনা জাহান তোরণ জানিয়েছেন, এবারের আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আলুর ফলন আশানুরূপ হয়েছে এবং বর্তমানে ৭ হাজার মেট্রিক টন আলু হিমাগারে সংরক্ষিত হয়েছে।