নিজস্ব প্রতিবেদক:
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, “গণহত্যা-লুটপাটে জড়িত নয়, এমন নিরপরাধ ব্যক্তির নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ রাজনীতি করতে পারবে, এমনকি এ বিষয়ে বিএনপির কোনো আপত্তি নেই।” তিনি এই মন্তব্য করেছেন শুক্রবার (২১ মার্চ) রাজধানীর উত্তরার দক্ষিণখানে ফায়দাবাদ মধ্যপাড়া হাজী শুকুর আলী মাদরাসা সংলগ্ন মাঠে দুস্থদের মধ্যে ঈদ উপহার সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে।
রিজভী বলেন, “আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিয়ে কথা হচ্ছে, কিন্তু বিচার নিয়ে কথা হচ্ছে না। দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে হবে। বিচারের পর আওয়ামী লীগকে জনগণের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। আর জনগণ ক্ষমা করলে আমাদের কোনো আপত্তি নেই।”
তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগ পুরোনো দল। অপরাধীদের বিচার হওয়ার পর যারা হত্যা-লুটপাটে জড়িত নয়, তাদের যদি জনগণ রাজনীতি করার সুযোগ দেয়, আমাদের কিছু বলার নেই।” তবে তিনি এ সময় সৎ ব্যক্তি নেতৃত্বে আসলে আওয়ামী লীগকে রাজনীতি করার অনুমতি দেয়ার পক্ষে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেন। তিনি বলেন, “যে লোক আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে আসবেন, তিনি যদি কোনো অপরাধ না করেন, ছাত্র হত্যা না করেন, অর্থ লোপাট বা পাচার না করেন- তাহলে সেই আওয়ামী লীগ কেন রাজনীতি করতে পারবে না? এটি হচ্ছে আমার বক্তব্য।”
এছাড়া, রিজভী গণহত্যা, টাকা পাচার, ও শিশু-কিশোর হত্যা নিয়ে কথা বলেন এবং বলেন, “যারা টাকা পাচার করেছে, যারা শিশু-কিশোর, আহনাফ, আবু সাঈদ, মুগ্ধদের হত্যা করেছে, এসব ঘটনায় জড়িতদের বিচার হতে হবে। শ্রমিক, রিকশাচালক, ছাত্র-ছাত্রী যাদের হত্যা করেছে, তাদের বিচার আমরা করি না কেন?”
তিনি আরও বলেন, “কারা গণহত্যা চালিয়েছে—এটা কি মানুষ দেখেনি? কোন পুলিশের ওসি, ডিসি, এসি এখানে ভূমিকা রেখেছে? কার নির্দেশে এসব ঘটেছে? রক্তপাত ঘটানোর জন্য আওয়ামী লীগের কোন নেতারা নির্দেশ দিয়েছেন?”
রিজভী শেখ হাসিনাকে লক্ষ্য করে বলেন, “শেখ হাসিনা আল্লাহকে বিশ্বাস করতেন কিনা সন্দেহ আছে। তার ঈশ্বর বা সৃষ্টিকর্তা ছিল টাকা। যার ঈশ্বর টাকা হয়, তিনি তো কোনোদিন ভালো কাজ করবেন না।” তিনি অভিযোগ করেন, শেখ হাসিনার পরিবারের সদস্যরা সরকারি অর্থ লোপাট ও ব্যাংক খালি করে কোটি কোটি টাকা পাচার করেছেন। রিজভী বলেন, “এ পাচারে অধিকাংশই শেখ হাসিনার আত্মীয়স্বজন পছন্দের লোকজন জড়িত। তাদের তো বিচার নিশ্চিত করতে হবে।”
শেষে তিনি বলেন, “মিথ্যা অঙ্গীকার দিয়ে তারা দুবার ক্ষমতায় এসে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। একবার তার বাবা সব দল বন্ধ করে দিয়ে বাকশাল করলেন, আর তার মেয়ে নতুন কায়দায় নতুনভাবে আরও ভয়াবহ বাকশাল তৈরি করে বিরোধী দলের কথা বলা, মানুষের কথা বলা, যা শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ন্যূনতম কেউ আওয়াজ করলে তার স্থায়ী ঠিকানা হয় কারাগার, আর অস্থায়ী ঠিকানা হয় তার বাড়ি।”