নিজস্ব প্রতিবেদক:
দীর্ঘ ১৭ বছর পর ২৭তম বিসিএস পরীক্ষায় নিয়োগবঞ্চিত ১,১৩৭ জন প্রার্থীকে চাকরি ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত। বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এই রায় দেন।
এর আগে, গতকাল (১৯ ফেব্রুয়ারি) এ-সংক্রান্ত রায়ের বিরুদ্ধে করা তিনটি আপিলের শুনানি শেষে আপিল বিভাগ রায়ের দিন ধার্য করেছিল।
এর আগে, ২০০৭ সালের ২১ জানুয়ারি ২৭তম বিসিএসের প্রথম মৌখিক পরীক্ষায় ৩,৫৬৭ জন উত্তীর্ণ হন। কিন্তু ওই বছরের ৩০ মে তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার এই ফল বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়, যা পরবর্তীতে পিএসসি বাস্তবায়ন করে। এরপর ২৯ জুলাই দ্বিতীয় মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে ৩,২২৯ জন উত্তীর্ণ হন এবং তাদের চাকরিতে নিয়োগ দেওয়া হয়।
এ নিয়ে উচ্চ আদালতে মামলা হলে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই হাইকোর্ট প্রথম মৌখিক পরীক্ষার ফলাফল বাতিলের সিদ্ধান্তকে বৈধ ঘোষণা করে। তবে ২০০৯ সালের ১১ নভেম্বর হাইকোর্টের আরেকটি বেঞ্চ দ্বিতীয় মৌখিক পরীক্ষা অবৈধ ঘোষণা করে।
এই রায়ের বিরুদ্ধে নিয়োগবঞ্চিত ২৫ জন আপিল বিভাগে দুটি লিভ টু আপিল করেন এবং সরকার তিনটি লিভ টু আপিল করে। ২০১০ সালের ১১ জুলাই আপিল বিভাগ সরকারপক্ষের আপিল নিষ্পত্তি করে এবং দ্বিতীয় মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া সঠিক বলে রায় দেয়।
পরবর্তীতে এই রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদনের ভিত্তিতে আপিল বিভাগের শুনানি হয়, যেখানে নিয়োগবঞ্চিত ১,১৩৭ জনের পক্ষে পৃথক আপিল করা হয়। অবশেষে, সর্বোচ্চ আদালত তাদের নিয়োগের পক্ষে রায় দেন।
এই মামলায় নিয়োগবঞ্চিতদের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সালাহ উদ্দিন দোলন, রাষ্ট্রপক্ষে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক এবং পিএসসির পক্ষে আইনজীবী মোহাম্মদ খালেকুজ্জামান ভূঁইয়া।
সালাহ উদ্দিন দোলন বলেন, “এক-এগারোর সরকারের সময় নেওয়া সিদ্ধান্তের কারণে ১,১৩৭ জনের নিয়োগ আটকে গিয়েছিল। দীর্ঘদিন আইনি লড়াইয়ের পর অবশেষে তারা ন্যায়বিচার পেলেন।”
এই রায়ের ফলে ২৭তম বিসিএসের ১,১৩৭ জন নিয়োগবঞ্চিত প্রার্থী সরকারি চাকরিতে ফিরতে পারবেন। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এখন তাদের নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
