অনলাইন ডেস্ক:
হোয়াইট হাউসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের সমালোচনার মুখে পড়ার পর এবার যুক্তরাজ্যে উষ্ণ অভ্যর্থনা পেলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমার তাকে পূর্ণ সমর্থনের আশ্বাস দিয়েছেন।
স্থানীয় সময় শনিবার (২ মার্চ) লন্ডনে স্টারমারের সঙ্গে বৈঠক করেন জেলেনস্কি। এছাড়া, রবিবার স্যান্ডরিংহামে ব্রিটিশ রাজা চার্লসের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বৈঠক করবেন তিনি। বিবিসি ও গার্ডিয়ানের খবরে বলা হয়েছে, ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে আলোচনার জন্য এই বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে।
স্টারমারের কার্যালয়ের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, রবিবার লন্ডনে অনুষ্ঠিতব্য ইউরোপীয় নেতাদের একটি বড় সম্মেলনের আগে দুই নেতার মধ্যে বৈঠক হয়। এই সম্মেলনের মূল লক্ষ্য ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে কৌশল নির্ধারণ করা এবং ইউরোপীয় ঐক্য প্রদর্শন করা।
সম্মেলনের অংশ হিসেবে রাজা চার্লসের সঙ্গে বৈঠক করবেন জেলেনস্কি। গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ বৈঠকের মাধ্যমে যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের অবিচল সমর্থনের বার্তা দেওয়া হয়েছে। ওয়েস্টমিনিস্টারে রাজকীয় বৈঠকের আয়োজন জেলেনস্কিকে ট্রাম্পের সমান মর্যাদা দিয়ে স্বাগত জানানোর ইঙ্গিত বলেও উল্লেখ করেছে সংবাদমাধ্যমটি।
বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, জেলেনস্কির অনুরোধেই রাজা চার্লসের সঙ্গে এই বৈঠকের আয়োজন করা হয়, যা ব্রিটিশ সরকার অনুমোদন দেয়।
এর আগে, হোয়াইট হাউসে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে উত্তপ্ত সংলাপের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যুক্তরাজ্যে পৌঁছান জেলেনস্কি। তিনি বলেন, ‘ব্রিটিশ রাজা আমার সঙ্গে বৈঠক করতে রাজি হয়েছেন, এতে আমি অত্যন্ত আনন্দিত।’
ডাউনিং স্ট্রিটে অনুষ্ঠিত বৈঠকে স্টারমার ইউক্রেনকে পূর্ণ সমর্থনের আশ্বাস দেন এবং সামরিক সহায়তার জন্য দুই দশমিক ২৬ বিলিয়ন পাউন্ডের একটি ঋণচুক্তি স্বাক্ষর করেন। এই ঋণ শোধ করতে জব্দ করা রুশ অর্থ ব্যবহার করা হবে।
জেলেনস্কি স্টারমারকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘এমন বন্ধু পেয়ে আমি খুবই আনন্দিত। যুদ্ধের শুরু থেকেই ব্রিটিশ জনগণ আমাদের পাশে ছিলেন।’
বৈঠকের পর স্টারমার ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রন ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গেও কথা বলেছেন। তবে ট্রাম্প-জেলেনস্কির সাম্প্রতিক বিরোধ যুক্তরাজ্যের কূটনৈতিক প্রচেষ্টাকে কিছুটা ছাপিয়ে গেছে বলে মনে করা হচ্ছে।
ইউরোপীয় প্রতিরক্ষা নীতিতে যুক্তরাজ্যের সক্রিয় ভূমিকা রাখতে চান স্টারমার। তবে দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর ইউরোপীয় নিরাপত্তায় যুক্তরাষ্ট্রের সম্পৃক্ততা কমানোর ইঙ্গিত দিয়েছেন ট্রাম্প। এই অবস্থায় ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে একটি শান্তি চুক্তির জন্য মার্কিন নিরাপত্তার নিশ্চয়তা চাইছে কিয়েভ।
ওভাল অফিসে উত্তপ্ত বিতর্কের পর সম্পর্ক মেরামতের চেষ্টায় রয়েছেন জেলেনস্কি। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘ওভাল অফিসে কঠিন সংলাপ হলেও আমরা কৌশলগত অংশীদার থাকব। আমাদের পারস্পরিক দায়িত্ব যথাযথভাবে বোঝার জন্য একে অপরের প্রতি সৎ ও দ্বিধাহীন থাকা জরুরি।’
যুক্তরাজ্যে পৌঁছানোর পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে জেলেনস্কি বলেন, ‘মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থন আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তিনি যুদ্ধ বন্ধ করতে চান, তবে আমরা যতটা চাই, কেউই ততটা শান্তি চান না।’