চট্টগ্রামে ধান-চাল সংগ্রহে ব্যর্থ হচ্ছে খাদ্য অধিদপ্তর

ফাইল ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক:

চট্টগ্রাম অঞ্চলে ধান-চাল সংগ্রহে প্রতি বছরই ব্যর্থ হচ্ছে খাদ্য অধিদপ্তর। গত পাঁচ বছর ধরেই এই অঞ্চলে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারেনি খাদ্য অধিদপ্তর, ফলে কৃষকদের সরকারি গুদামে ধান-চাল বিক্রিতে আগ্রহ সৃষ্টির প্রচেষ্টা তেমন সফল হয়নি। চলতি অর্থবছরে ১ লাখ ২৩ হাজার ৫৫৫ টনের মধ্যে মাত্র ৬৩ হাজার টন ধান, আতপ ও সেদ্ধ চাল কেনা হয়েছে, যা লক্ষ্যমাত্রার ৫০.৭৩ শতাংশ।

এই ব্যর্থতার প্রধান কারণ হিসেবে খাদ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, সরকারি ধান ও চাল কেনার দীর্ঘসূত্রতা, মান নিয়ন্ত্রণের সমস্যা, এবং কৃষকদের বিক্রির টাকা পেতে দেরি হওয়া। এছাড়া, মিলমালিকদের সঙ্গে চুক্তি সত্ত্বেও লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব হয়নি। এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে খাদ্য অধিদপ্তরকে ধান ও চাল সংগ্রহের ব্যবস্থা সহজতর করার জন্য কৃষকদের অর্থ দ্রুত পরিশোধ করার ব্যবস্থা নিতে হবে। পাশাপাশি, স্থানীয় মিলমালিকদের কার্যকরভাবে সংযুক্ত করতে হবে এবং আঞ্চলিক কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে বিশেষ প্রণোদনা দেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে।

গত পাঁচ বছরে চট্টগ্রাম অঞ্চলের ধান-চাল সংগ্রহের অবস্থা ছিল এমন— ২০২০-২১ অর্থবছরে ১৭ হাজার ৩৫৪ টন ধানের মধ্যে মাত্র ৯৬৪ টন, ৩৭ হাজার ৮৫০ টন সেদ্ধ চালের মধ্যে ২ হাজার ১৯৬ টন, এবং ১০ হাজার ৩৮৮ টন আতপ চালের মধ্যে ১ হাজার ১৮১ টন কেনা হয়েছিল। ২০২১-২২ অর্থবছরে ৪২ হাজার ৬১৩ টন ধানের মধ্যে ১২ হাজার ৭৪৯ টন, এবং ৫৮ হাজার ১৮৪ টন সেদ্ধ চালের মধ্যে ৫৬ হাজার ৬৮৫ টন কেনা হয়। ২০২২-২৩ এবং ২০২৩-২৪ অর্থবছরে আরও কম ধান ও চাল কেনা হয়েছে, যা লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে কম।

সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম অঞ্চলে ধানের আবাদ এবং উৎপাদনের হার অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় কম। এর ফলে কৃষকদের ধান ও চাল বিক্রিতে আগ্রহ তৈরি করা কঠিন হয়ে পড়ছে, যা খাদ্য অধিদপ্তরের সংগ্রহ লক্ষ্যমাত্রা পূরণে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

চট্টগ্রাম আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ের সহকারী উপপরিচালক মো. সহিদ উদ্দিন মাহমুদ জানান, “চলতি মৌসুমের আমন ধান ও চাল কেনা কিছুটা সন্তোষজনক হলেও, ধান কেনা একেবারেই হয়নি। এর কারণ হলো গত মৌসুমে চট্টগ্রাম অঞ্চলে বন্যা এবং কৃষকদের ধান, চাল বিক্রির আগ্রহের অভাব।”