যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ আফ্রিকার রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কার করছে

অনলাইন ডেস্ক:

ওয়াশিংটনে নিযুক্ত দক্ষিণ আফ্রিকার রাষ্ট্রদূত ইব্রাহিম রসুলকে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এক পোস্টে জানিয়েছেন, তাকে “আমাদের মহান দেশে আর স্বাগত জানানো হবে না”। এই পদক্ষেপটি দুই দেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার সর্বশেষ ঘটনা হিসেবে সামনে এসেছে।

রাষ্ট্রদূত রসুলের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং তার প্রশাসনের বিরুদ্ধে ঘৃণা প্রকাশের অভিযোগ আনা হয়েছে। রুবিও তাকে “বর্ণবাদী রাজনীতিবিদ” বলে উল্লেখ করেছেন এবং বলেছেন, “তার সঙ্গে আমাদের আলোচনা করার কিছু নেই।” শুক্রবার, রুবিও তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে একটি পোস্টে ডানপন্থি সংবাদমাধ্যম ব্রেইটবার্টের একটি নিবন্ধ শেয়ার করেন, যেখানে রসুলের ট্রাম্প প্রশাসন সম্পর্কে করা কিছু সাম্প্রতিক মন্তব্য উদ্ধৃত করা হয়েছে।

রসুল, এক অনুষ্ঠানে ট্রাম্প প্রশাসন সম্পর্কে মন্তব্য করেছিলেন যে, “দেশে ও বিদেশে ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে আধিপত্যবাদকে সংগঠিত করে ট্রাম্প যা শুরু করেছেন, তা হলো ক্ষমতায় থাকা ব্যক্তিদের ওপর আক্রমণ।” এই মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রুবিও রসুলকে “অবাঞ্ছিত ব্যক্তি” হিসেবে ঘোষণা করেছেন।

এদিকে, দক্ষিণ আফ্রিকার নতুন আইন এক্সপ্রোপিয়েশন অ্যাক্টের বিষয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প গত মাসে একটি নির্বাহী আদেশে সই করেছেন, যার মধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকায় শ্বেতাঙ্গ আফ্রিকানদের বিরুদ্ধে জাতিগত বৈষম্যের অভিযোগ আনা হয়। ট্রাম্প এআইনে ব্যক্তিগত জমি কেড়ে নেওয়ার জন্য সরকারের অনুমতি দেওয়ার বিষয়টি তুলে ধরেছেন। হোয়াইট হাউসের এক বিবৃতিতে বলা হয়, “যতক্ষণ পর্যন্ত দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বমঞ্চে খারাপ ব্যক্তিদের সমর্থন করবে এবং নিরীহ কৃষকদের ওপর সহিংস আক্রমণের অনুমতি দেবে, ততক্ষণ পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দেশটিকে সাহায্য-সহায়তা বন্ধ রাখবে।”

তবে দক্ষিণ আফ্রিকার সরকার তাদের নতুন আইনটির সঙ্গে জাতিগত বিষয়ের কোনো সম্পর্ক অস্বীকার করেছে। তারা দাবি করেছে যে, এক্সপ্রোপিয়েশন অ্যাক্টের উদ্দেশ্য শ্বেতাঙ্গ আফ্রিকানদের টার্গেট করা নয়।

রাষ্ট্রদূত রসুল কেপটাউনে জন্মগ্রহণ করেন এবং বেড়ে ওঠেন। ৯ বছর বয়সে তাকে এবং তার পরিবারকে জোর করে একটি অ্যাপার্টমেন্ট থেকে বের করে দেওয়া হয়েছিল, যা শুধুমাত্র শ্বেতাঙ্গদের জন্য নির্ধারিত ছিল। তিনি জানিয়েছেন, এই ঘটনা তার জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত ছিল, যা পরবর্তীতে তার রাজনৈতিক আগ্রহ এবং চিন্তা-চেতনা গঠনে প্রভাব ফেলেছে।

রসুল ২০১০ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত ওয়াশিংটনে দক্ষিণ আফ্রিকার রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন এবং বর্তমানে ২০২৫ সালে পুনরায় এই পদে নিযুক্ত হন।