কারিগরি শিক্ষার্থীদের ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম: দাবিপূর্ণ না হলে ‘লংমার্চ টু ঢাকা’

নিজস্ব প্রতিবেদক:

কারিগরি শিক্ষার কাঠামোগত সংকট ও দীর্ঘদিনের দাবিসমূহ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এবার চূড়ান্ত কর্মসূচির পথে হাঁটছেন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। রাজধানীর ঢাকা মহিলা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট সংলগ্ন এক মহাসমাবেশ থেকে তারা ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছেন, সময়মতো দাবি না মানা হলে ‘লংমার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

সারা দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা শিক্ষার্থীরা এই মহাসমাবেশে অংশ নেন। তারা জানান, দীর্ঘ আট মাস ধরে চলমান আন্দোলনের পরও সরকার কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি, বরং সময়ক্ষেপণ করে শিক্ষার্থীদের হতাশ করছে।

শিক্ষার্থীদের দাবি ছয় দফার ভিত্তিতে গড়ে উঠেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো—

জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর পদে অবৈধ প্রমোশন বাতিল ও সংশ্লিষ্টদের অপসারণ,

কারিগরি কোর্সে বয়সসীমা নির্ধারণ এবং মানসম্পন্ন ইংরেজিমাধ্যম কারিকুলাম চালু,

ডিপ্লোমা পাস শিক্ষার্থীদের জন্য সরকারি পদ সংরক্ষণ ও নিয়োগে বৈষম্য নিরসন,

কারিগরি পদে অ-কারিগরি জনবল নিয়োগ বন্ধ ও দক্ষ জনবল নিয়োগ নিশ্চিতকরণ,

স্বতন্ত্র কারিগরি ও উচ্চশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং সংস্কার কমিশন গঠন,

টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা ও চলমান প্রকল্পে ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা।

ছাত্ররা আরও জানান, তারা এই আন্দোলন চালিয়েছেন শান্তিপূর্ণভাবে। এর মধ্যে ছিল ‘রাইজ ইন রেড’ কর্মসূচি, কাফনের কাপড় পরে প্রতিবাদ, সড়ক ও রেলপথ অবরোধসহ নানা উদ্যোগ। তবুও সরকার তাদের দাবির প্রতি আন্তরিক হয়নি।

মহাসমাবেশে ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি মিজানুর রহমান বলেন,
“দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে এলেও আমরা কোনো বাস্তব পদক্ষেপ দেখতে পাইনি। এখন সময় এসেছে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দাবি না মানা হলে আমরা লংমার্চ করব। তখন এর দায় সরকারকে নিতে হবে।”

তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা রাস্তায় থাকতে চান না, কিন্তু বাধ্য হচ্ছেন। এই আন্দোলন কোনো ব্যক্তিস্বার্থে নয়, বরং কারিগরি শিক্ষার মর্যাদা ও ভবিষ্যৎ উন্নয়নের জন্য।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, তারা জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করতে চান না, তবে দাবি উপেক্ষিত হলে আন্দোলনের মাত্রা বাড়বে। ইতোমধ্যেই তারা দেশজুড়ে সংগঠিত হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন এবং ‘লংমার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচির মাধ্যমে বিষয়টি জাতীয় পর্যায়ে তুলে ধরবেন।